ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশনে এখনও কালোবাজারে টিকেট বিক্রি হচ্ছে বলে নানা যাত্রীর কাছে অভিযোগ পাওয়ার পর গত কয়েকদিন সরেজমিন গিয়ে হাতেনাতে প্রমাণ পাওয়া যায়। কমলাপুর স্টেশনে গিয়ে মোহনগঞ্জগামী হাওড় এক্সপ্রেসের টিকেট কাউন্টারে চাইলে বলে দেওয়া হয়, টিকেট নেই।
একটি ট্রেন রাত সোয়া ১০টায় ছাড়ার কথা। নানা যাত্রীর অভিযোগ যাচাই করতে তখন স্টেশনে ইউনিফর্ম পরা এক কুলির সঙ্গে যাত্রী সেজে কথা বললে তিনি টিকেটের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
এরপর ওই কুলি নিয়ে যান স্টেশনের গেইটের কাছে। সেখানে ‘কুলি ইনচার্জ’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে একজন বলেন, টিকেট দেওয়া যাবে। হাওড় এক্সপ্রেসের শোভন চেয়ারের একটি টিকেটের দাম ১৮৫ টাকা। তিনি চাইলেন এক হাজার টাকা।
আসলেই কালোবাজারে টিকেট এখনও মেলে কি না, তা নিশ্চিত হতে তার সঙ্গে সাধারণ যাত্রী সেজে দর কষাকষি শুরু করলে ৫০০ টাকায় দিতে রাজি হন তিনি।
সাংবাদিক পরিচয় গোপন রাখতে ৫০০ টাকা দিয়ে সেই টিকেট নিয়ে দাম এত বেশি রাখার কারণ জানতে চাইলে সেই কুলি বলেন, “এই টাকার পুরাটা আমরা পাই না। যেই টাকা লাভ হইল, তার থেকে মোটে ১০০ টাকার মতো পামু। বাকি টাকা থেকে ‘বড় স্যাররেও’ দিতে হয়।”
‘বড়স্যার’ কে-জানতে চাইলে মুচকি হাসেন তিনি। এরপর বলেন, “একটু সিস্টেম কইরা না চললে স্টেশনে তো টিকাই যাইব না।”
সেই কুলিকে বিদায় দিয়ে স্টেশনে অপেক্ষমান যাত্রীদের সঙ্গে সাংবাদিক পরিচয়ে কথা বললে অনেকই বলেন, এখনও কালোবাজারে টিকেট মেলে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুর রব বলেন, “স্টেশনের অধিকাংশ দোকানেই টিকেট বিক্রি হয়। কেউ কেউ দিতে না পারলেও ওদের বললে অন্য লোক ডেকে এনে টিকেটের ব্যবস্থা করে দেয়।
“ইদানীং একটা ব্যাপার লক্ষ করছি যে, স্টেশনে কর্তব্যরত আনসাররাও টিকেট বিক্রি করছে। কৌশলে একটু চেষ্টা করলেই তাদের কাছ থেকেও টিকিট পাওয়া যায়।”
নিজের দেখা এক ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, “একবার অনলাইন আর কাউন্টারে টিকেট না পেয়ে স্টেশন এলাকায় খোঁজ করলাম। এক লোক বলল, অর্ধেক রাস্তা পর্যন্ত টিকেট দিতে পারবে। তবে দাম নিবে সাড়ে চারশ টাকা। অথচ টিকেটের দাম ২০০ টাকা।”
একই অভিযোগ করেন ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এস এম মামুন খান।
তিনি বলেন, “প্রতিটি স্টেশনের নিকটবর্তী অনেকে আছেন, যারা টিকিট কেটে রেখে পরবর্তীকালে চড়া দামে বিক্রি করছেন।
“আমি গত দিনগুলোতে রংপুর থেকে ঢাকা আসার জন্য পাঁচ দিন আগে থেকে চেষ্টা করেও যখন টিকিট পেতে ব্যর্থ হতাম, তখন স্টেশনে গিয়ে একটু খোঁজাখুঁজি করলে ৫১০ টাকার টিকিট আটশ থেকে নয়শ টাকায় পেয়ে যেতাম। স্টেশনে অনেকেই আছে যারা পেশাগতভাবেই এই কাজ করে, আর আমরা সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হই।”
ট্রেন টিকেটের কালোবাজারি যে বন্ধ হয়নি, তা রেল পুলিশের তথ্যেই দেখা যায়।
২০২১ সালে টিকেট কালোবাজারির জন্য ২৩টি মামলায় মোট ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছেন রেলওয়ে পুলিশের উপমহাপরিদর্শক শাহ আলম।
রেলের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে প্রতিদিন বিভিন্ন স্টেশন থেকে সব মিলিয়ে ৩৪০টি ট্রেনে এক লাখ ৯০ হাজার যাত্রী ভ্রমণ করেন। অনলাইনে দিনে গড়ে ৩৫ হাজার আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট বিক্রি হয়।
অনলাইনের টিকেটও কি কালোবাজারে?
ট্রেনের টিকেটের অর্ধেক অনলাইনে আর অর্ধেক এখন স্টেশনের কাউন্টারে বিক্রি হচ্ছে। কাউন্টারে থাকা টিকেটের সঙ্গে অনলাইনের টিকেটও কালোবাজারে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
অথচ দুই বছর আগে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেছিলেন, অনলাইনে টিকেট বিক্রি কালোবাজারি বন্ধ করে দেবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে প্রতিদিন বিভিন্ন স্টেশন থেকে সব মিলিয়ে ৩৪০টি ট্রেনে এক লাখ ৯০ হাজার যাত্রী ভ্রমণ করেন। অনলাইনে দিনে গড়ে ৩৫ হাজার আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেট বিক্রি হয়।
সকাল ৮টা থেকে রাত সাত ১১টা পর্যন্ত টিকেট কেনা যায় অনলাইনে। তবে অনেকের অভিযোগ, শুরুর সময় লগইনই করা যায় না অ্যাপে, যখন ঢোকা যায়, ততক্ষণে টিকেট শেষ।
ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জে নিয়মিত যাতায়াতকারী তাপস ইকবাল বলেন, “কোনো উৎসব যেমন ঈদ কিংবা পূজার সময় আর অ্যাপে ঢোকাই যায় না। যদিওবা ঢোকা যায়, সাথে সাথে দেখা যায় সব টিকেট শেষ।
“তাছাড়া শুক্র, শনি ও রোববার টানা সরকারি ছুটি থাকলে এর আগে কোনো টিকেট পাওয়া যায় না। টিকেট কেনার জন্য বেঁধে দেওয়া সময়ের শুরু থেকে আধাঘণ্টার মধ্যেই দেখা যায় কোনো টিকেট নাই।”
কিন্তু পরবর্তীকালে ‘ব্ল্যাকারদের’ কাছে চড়া দামে টিকেট পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “যদি আমরা কেউই টিকেট না পেয়ে থাকি, তাহলে ব্ল্যাকাররা কীভাবে এই টিকেট সবসময়ই পাচ্ছে? আমার মনে হয়, টিকিটের কালোবাজারিতে একটা বড় রকমের সিন্ডিকেট রয়েছে।”
যাত্রীদের ভোগান্তি দূর করতে ২০১৯ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ে চালু করে ‘রেলসেবা অ্যাপ’। তখন বলা হয়েছিল, অ্যাপটি ব্যবহার করে সহজেই টিকেট কাটাসহ আনুষঙ্গিক সেবা মিলবে।
তার আগে ২০১২ সাল থেকে ওয়েবসাইটে টিকেট কেনার সুযোগ ছিল। অ্যাপ চালুর সময় ওয়েবসাইটও নতুন করে নির্মাণ করা হয়।
রেলের টিকিট ব্যবস্থাপনার কারিগরি দিক দেখভাল করে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমস বাংলাদেশ লিমিটেড (সিএনএসবিডি) নামের একটি সফটওয়্যার কোম্পানি।
এই কোম্পানির এক প্রতিনিধি বলেন, “কেউ যদি অনলাইন থেকে টিকেট কিনে সেটা বেশি দামে স্টেশন কিংবা অন্য খানে অথবা বাসায় বসে বিক্রি করে, সে ক্ষেত্রে তো কিছু করার নেই।”
কমলাপুরে কাউন্টারে টিকেট না পেয়ে অনেকের ফিরতে হয়, অথচ বাইরে কালোবাজারে টিকেট মেলে। ফাইল ছবি
যে গলদে কালোবাজারির সুযোগ
রেলসেবা অ্যাপ বা রেলের ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ের ব্যবস্থা না থাকায় কালোবাজারির পথ তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ থেকে প্রায় চার মাস এই পদে দায়িত্ব পালনকারী এই কর্মকর্তা বলেন, “আমাদের দেশে সুরক্ষা অ্যাপ, ব্যাংক সেবাসহ যতগুলো অনলাইন সার্ভিস চলছে, তাদের প্রায় সবগুলোই জাতীয় পরিচয়পত্র সার্ভার দিয়ে সংযুক্ত করা আছে। প্রত্যেকেই এনআইডি নম্বর ও তাতে দেওয়া তথ্যের যথাযথ যাচাই করলেও রেলসেবা কোনোভাবেই এনআইডি নম্বর ভ্যারিফাই করে না। এটা শুধু একটি ‘আইওয়াশ’ মাত্র! যা দিয়ে কোনোভাবেই টিকেট কালোবাজারি দূর করা সম্ভব হবে না।”
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে মাহবুব কবীর বলেন, “এই এনআইডি নম্বর যাচাই করার ব্যবস্থা থাকলে ‘টিকেট যার, ভ্রমণ তার’ ব্যাপারটি কার্যকর হতে পারত। ব্ল্যাকাররাও সুবিধা করতে পারত না। কারণ তখন এনআইডি নম্বর যাচাইয়ের পাশাপাশি টিকেটের জন্য যাত্রীকে একটি ইউনিক আইডি নম্বর দেওয়া হত, ট্রেনে উঠার সময় গার্ডকে সেই ইউনিক আইডি নম্বর জানিয়ে দিলেই চলত।”
অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কিনতে হলে রেলসেবা অ্যাপে একাউন্ট খুলতে হয়। তা খোলার সময় এখন জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই না হওয়ায় এক ব্যক্তির পক্ষে অনেকগুলো একাউন্ট খোলা সম্ভব।
এখন সরকারি নিয়মেই এক নামে ১৫টি মোবাইল সিম রাখা যায়। ফলে একজন ব্যক্তি তার ১৫টি সিম ব্যবহার করে ১৫টি একাউন্ট খুলে ফেলতে পারেন। আর একটি একাউন্ট থেকে একবারে সর্বোচ্চ চারটি টিকেট কেনার সুযোগ থাকলেও ১৫টি একাউন্টধারী কেউ একেবারে ৬০টি টিকেট কিনে ফেলতে পারেন।
আবার যার টিকেট, তিনি ভ্রমণ করছেন কি না, যাত্রা পথে তা যাচাইয়ের কোনো ডিজিটাল ব্যবস্থা নেই রেলওয়ের। ফলে কালোবাজারে টিকেট কিনে ভ্রমণ করলেও তা ধরা যায় না।
মাঝে রেল কর্তৃপক্ষ যাত্রার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক করলেও এখন তা আর নেই। যাত্রীদের ক্ষোভের মুখে তা থেকে সরে আসা হয়েছে বলে রেল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ট্রেনে কারও কেনা টিকেট বিক্রি বা হস্তান্তর করলে তিন মাস পর্যন্ত জেল ও জরিমানার শাস্তি থাকলেও তার প্রয়োগ দেখা যায় না বললেই চলে।
টিকেট কালোবাজারির সঙ্গে রেলকর্মীদের যোগসাজশের ইঙ্গিত দিয়ে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব কবীর বলেন, “টিকেট কালোবাজারির সঙ্গে সিএনএসবিডি নয়, বরং রেলওয়ের কর্মচারীরা নিজেরাই জড়িত।
“যদি সেই থার্ড পার্টি সার্ভারেরই দোষ থাকে, তাহলে রেলওয়ে কেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না? কারণ গলদ তো তাদের ভেতরেই।”
কোনো কারণে ট্রেনের যাত্রা বাতিল করতে স্টেশনের টিকেট কাউন্টারে গিয়ে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে টিকেট ফেরত দিতে হয় যাত্রীদের।
ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া এড়াতে কেউ কেউ স্টেশনে গিয়ে সেই টিকেট বাইরে বিক্রি করে দিচ্ছেন, তেমন অবৈধ কাজও দেখা গেছে।
রাজশাহীগামী সিল্ক সিটির টিকেট ফেরত দিতে ১৩ জানুয়ারি কমলাপুর গিয়ে আরেক যাত্রীর কাছে তা বিক্রির পর এক ব্যক্তি বলেন, “টিকেট বাতিলের জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে কমিশন কাউন্টার থেকে কেটে রাখে। তাছাড়া লাইনে দাঁড়িয়ে ভিড় ঠেলে টিকেট বাতিল করতে হয়।
“এখানে আরেকজন ভদ্রলোককে পেয়ে গেলাম। আমি যেই দামে টিকেটটা কিনেছিলাম, সেই দামেই তাকে দিয়েছি। আমার জন্য সহজ হল।”
কী বলছেন দায়িত্বশীলরা
সকালে টিকেট কিনতে অ্যাপে লগইন করতে না পারার অভিযোগ নিয়ে রেলসেবা অ্যাপের টেকনিকাল সাপোর্ট টিমের প্রতিনিধি দাবি করেন, অ্যাপের সার্ভারে কোনো সমস্যা নেই।
তিনি বলেন, “একটা ট্রেনে যদি এক হাজার সিট থাকে, তাহলে তার জন্য পাঁচশ টিকেট কিনতে হয় স্টেশন থেকে, বাকি পাঁচশ টিকিট অনলাইন থেকে সংগ্রহ করতে হয়। এক্ষেত্রে ছুটির দিনগুলোতে সেই ট্রেনের টিকেট কেনার ক্ষেত্রে একটা বড় রকমের চাপ থাকবে সেটাই স্বাভাবিক।
“যখন একসাথে অনেক মানুষ সার্ভারে হিট করে, তখন অনলাইনে টিকিট এভেইলেবল থাকাটা আসলেই কঠিন হয়ে যায়। অভিযোগ আসে যে, টিকেট অনলাইন থেকে নাই হয়ে গিয়েছে। ব্যাপারটা তো সেরকম না। অনলাইন থেকে এমনিতেই তো টিকেট নাই হয়ে যাবে না। এক মিনিটের মধ্যে পাঁচশজন যদি সিট বুক করে ফেলে, সেক্ষেত্রে আমাদের সার্ভারের তো কিছু করার নেই।”
টিকেট কালোবাজারি নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগের বিষয়ে রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, “সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ দাখিল করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এর সাথে যেই জড়িত থাকুক না কেন।”
অনলাইনে টিকেট কাটায় ভোগান্তি নিয়ে তিনি বলেন, “অনেকেই অনলাইন টিকেট ক্রয় করতে গিয়ে নানাবিধ সমস্যার কথা জানিয়ে আমাদের কাছে অভিযোগ করেন, এ বিষয়ে আমরা খতিয়ে দেখব। তবে বাংলাদেশ রেলওয়ের কারিগরি ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাহায্যে এটির সমাধানের চেষ্টা করতে হবে।”
অনলাইন টিকেট কেনায় জাতীয় পরিচয়পত্রের ব্যবহারের বিষয়ে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, “ই-টিকেট কেনার ক্ষেত্রে এনআইডি ভ্যারিফিকেশন না হলেও আমাদের ‘টু ফ্যাক্টর অথেন্টিসিটি’ অনুসরণ করা হয়। মোবাইল নম্বরে পাঠানো ভ্যারিফিকেশন কোড দিয়েই কিন্তু অ্যাপটি চালু হয়। আর এখন সিমকার্ডও জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়েই খোলা হয়, সেখানে তো তথ্য যাচাই হচ্ছেই।”
তবে তাতেও এক ব্যক্তির একাধিক একাউন্ট খোলার সুযোগ যে বন্ধ হচ্ছে না, সে বিষয়টি স্বীকার করেন রেলের কর্মকর্তারা।
রেলের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র মজুমদার বলেন, “এনআইডি ভ্যারিফিকেশনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমাদের নতুন দরপত্র প্রক্রিয়াধীন আছে।”
অনলাইনে টিকেট কাটতে গেলে নানা সময়ে টাকা কাটার পর টিকেট না পেলে সেই অর্থ ফেরত পাওয়ায় ক্ষেত্রেও ভোগান্তির অভিযোগও রয়েছে।
এ বিষয়ে রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সাহাদাত আলী বলেন, “বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-টিকেট সেবার সাথে বেশ কয়েকটি পেমেন্ট গেটওয়ের সংযুক্তি আছে। একজন যাত্রী অনলাইনে টিকেট বুক করার সময় পেমেন্টের জন্য যে গেটওয়ে ব্যবহার করেন, সেখান থেকেই সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ হয়ে সেই তথ্য বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছে আসে।
“এর মাঝে সেই যাত্রীর পেমেন্ট হতেও পারে, আবার বাতিলও হতে পারে। কোনোভাবে যদি এই পেমেন্ট গেটওয়ে থেকে মেসেজটা বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছে এসে না পৌঁছায়, ততক্ষণ পর্যন্ত টিকেটের টাকা রিফান্ডের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে রেলওয়ের কিছু করার থাকে না। পেমেন্ট গেটওয়ে থেকে কনফার্মেশন আসার পরেই যাত্রীর নামে সিট বরাদ্দ হয়।”
অনলাইনে কেনা টিকেট বাতিল করতে চাইলে সরাসরি স্টেশনে যাওয়ার ভোগান্তি নিয়ে সাহাদাত আলী বলেন, “আমাদের অনলাইন টিকেট রিফান্ড সিস্টেম প্রক্রিয়াধীন আছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হবে বলে আমরা আশা করছি। তখন যাত্রীদের টিকেট বাতিল করার জন্য কষ্ট করে স্টেশনের কাউন্টারে আসতে হবে না।”
অনলাইনে প্রতি টিকেটে ভাড়ার বাইরেও ২০ টাকা করে মাশুল দিতে হয়। একজন ব্যক্তি অনলাইন থেকে সর্বোচ্চ চারটি টিকেট কিনতে পারেন। চারটি টিকেট একই পৃষ্ঠায় দেওয়ার পরও এর জন্য ৮০ টাকা মাশুল রাখা নিয়েও আপত্তি রয়েছে যাত্রীদের।
এবিষয়ে সাহাদাত আলী বলেন, “বাসে টিকেটের দাম এবং দূরত্বের উপর নির্ভর করে ১৫ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত চার্জ রাখা হয়, বিমানের ক্ষেত্রেও টিকেটের মূল্যের দেড় শতাংশ চার্জ রাখা হয়। এসব ক্ষেত্রে তো কোনো প্রশ্ন উঠে না, তবে রেলওয়ের ক্ষেত্রেই কেন?”
প্রধান নির্বাহী - আরেফিন শাকিল, অফিসঃ নদী বাংলা টাওয়ার, শহীদ বুলু স্টেডিয়াম সংলগ্ন, মাইজদী কোর্ট, নোয়াখালী। ফোনঃ 01303-166473