এনবি নিউজ : চলতি বছরের মতো সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তবে আগামী বছর সকল বিষয়ের পূর্ণ নম্বরে এবং পূর্ণ সময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান তিনি।
আজ ১২ এপ্রিল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘২০২৩ সালের এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার সিলেবাস’ সংক্রান্ত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
২০২০ সালের মার্চ মাসে দেশে করোনার সংক্রমণ শুরুর আগেই এসএসসির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর এইচএসসি পরীক্ষা সে বছর আর অনুষ্ঠিত হয়নি। অধ্যাদেশ জারি করে, তার বদলে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন ফল দেওয়া হয়। পরে সংক্রমণে টানা দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ২০২১ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষাও পিছিয়ে যায়। প্রায় ৯ মাস পেছানোর পর গেল নভেম্বরে এসএসসি ও আট মাস পিছিয়ে ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে ঘাটতি থাকায় গতবছর সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয় তিন বিষয়ে। আর এইচএসসি পরীক্ষা হয় তিন বিষয়ের ছয়টি পত্রে। সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানান, চলতি বছরের মতো ২০২৩ সালেও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে সকল বিষয়ের পূর্ণ নম্বরে এবং পূর্ণ সময়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, সাধারণত এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষা ফেব্রুয়ারি মাসে এবং এইচএসসি, আলিম ও সমমান পরীক্ষা এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ২০২৩ সালের এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষা এপ্রিল মাসে এবং এইচএসসি, আলিম ও সমমান পরীক্ষা জুন মাসে অনুষ্ঠিত হবে।
বর্তমানে দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা ২০২৩ সালে এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষায় এবং একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরতরা এইচএসসি, আলিম ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘২০২৩ সালের এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষার্থীরা নবম শ্রেণিতে ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়নি। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে ওমিক্রনের প্রভাব শুরু হওয়ার আগে চলতি বছর ১৪ মার্চ পর্যন্ত সপ্তাহে দু'দিন করে সরাসরি ক্লাশ করার সুযোগ পেয়েছে তারা। এর মধ্যে ২০ জানুয়ারি থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওমিক্রনের সংক্রমণে আবারও প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল।
তিনি জানান, গেল ১৫ মার্চ থেকে তারা সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রমে সপ্তাহে ছয় দিন করে অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে এই নবম ও দশম শ্রেণিতে মিলে সর্বমোট ১৬২ কর্মদিবস শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। যেখানে স্বাভাবিক অবস্থায় তারা ৩১৬ কর্মদিবস ক্লাস করার কথা। তাছাড়াও এই শিক্ষার্থীরা ২০২০ সালে ৮ম শ্রেণিতে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষাতেও অংশ নিতে পারেনি। এমনকি নবম শ্রেণির পরীক্ষাও দিতে পারেনি।
এসব দিক বিবেচনায় ২০২৩ সালের এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষা ২০২২ সালের পরীক্ষার জন্য ঘোষিত সিলেবাস অনুসারেই অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি এসময় আরও উল্লেখ করেন, ‘যদিও এই পুরো সময়টায় তারা টেলিভিশনের ক্লাসে এবং অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করেছে, অ্যাসাইনমেন্ট করেছে। এসব ক্লাস এবং অ্যাসাইনমেন্টগুলো ২০২২-এর পরীক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ১৫০ কর্মদিবসের পরিমার্জিত পাঠ্যসূচি অনুসারেই পরিচালিত হয়েছে।’
অন্যদিকে ২০২৩ সালে এইচএসসির পরীক্ষার্থীদের বিষয়ে ডা. দীপু মনি বলেন, ‘এই শিক্ষার্থীরা ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস করার কথা ছিল। কিন্তু তারা ক্লাস শুরু করতে পেরেছে চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে। অর্থাৎ তারা ৮ মাস ক্লাস করার সুযোগই পায়নি বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের স্বাভাবিক শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে তারা সর্বমোট ২০০ কর্মদিবস শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে। স্বাভাবিক অবস্থায় ৩৩০ কর্মদিবস শ্রেণি কার্যক্রম হতো। এই পরীক্ষার্থীরা ২০২১ সালের এসএসসি, দাখিল ও সমমানের সংক্ষিপ্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছে। এ অবস্থায় ২০২৩ সালের এইচএসসি, আলিম ও সমমান পরীক্ষা ২০২২ সালের পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত ১৮০ কর্মদিবসের পাঠ্যসূচি অনুসারে অনুষ্ঠিত হবে।’
এ টি
প্রধান নির্বাহী - আরেফিন শাকিল, অফিসঃ নদী বাংলা টাওয়ার, শহীদ বুলু স্টেডিয়াম সংলগ্ন, মাইজদী কোর্ট, নোয়াখালী। ফোনঃ 01303-166473