এনবি নিউজ : আগামী ২৫ জুন যান চলাচলের জন্য পদ্মা সেতু খুলে দেওয়া হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে বহু প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত বিশ্বের দরবারে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। জাতির আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে দিয়েছে।’
আজ ৩০ সোমবার মে ঢাকা সেনানিবাসের সেনা সদর দফতরের মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে আর্মি সিলেকশন বোর্ড ২০২২-এর বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনৈক ব্যক্তি পদ্মা সেতু প্রকল্পে মিথ্যা-দুর্নীতির অভিযোগ আনায়, কোনও বোর্ড মিটিং না করেই বিশ্বব্যাংক সেতুটি নির্মাণে অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল। যদিও পরে ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যে অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করেছি, (বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অর্জন করেছে) তা নিয়ে আমাদের আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যেত হবে।’
সেনাবাহিনীর বিভিন্ন জাতি গঠনমূলক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ আর্মি সবসময়ই অবকাঠামো নির্মাণসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নে অবদান রেখে গেছে।’
প্রধানমন্ত্রী তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জনগণের আত্মবিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারিতে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, বিজিবিসহ সবাই জনগণের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমন ও অভিযোজন সংক্রান্ত সরকারি পদক্ষেপ সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জলবায়ু উদ্বাস্তুদের আশ্রয় দিতে কক্সবাজারের খুরুসকুলে ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়েছে।’ তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে সারা দেশে কেউ ভূমিহীন এবং গৃহহীন থাকবে না। কারণ, তার সরকার বিনামূল্যে জমি দিয়ে বাড়ি করে দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বে বাংলাদেশই একমাত্র উদাহরণ, যেখান থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গতিশীল নেতৃত্বে তিন মাসের মধ্যে মিত্রবাহিনী তাদের দেশে ফিরে গেছে।’
তৎকালীন পূর্ব (বর্তমানে বাংলাদেশ) এবং পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে প্রতিটি সেক্টরে বিশেষ করে সরকারি চাকরিতে বৈষম্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি সামরিক সার্ভিসে শুধু একজন কর্নেল ছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘তবে, এখন জেনারেলরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে আছেন এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের ঊর্ধ্বে উঠে নেতৃত্বের জন্য পেশাদারি দক্ষতা, উৎকর্ষ, সততা ও দেশপ্রেমসম্পন্ন কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিতে হবে।’
‘আপনাকে মনে রাখতে হবে যে নিরপেক্ষ মূল্যায়নের মাধ্যমে পেশাদারভাবে দক্ষ নেতৃত্ব নির্বাচন করা সম্ভব এবং আপনাকে পদোন্নতির জন্য উচ্চ নৈতিক চরিত্রের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে’, বলেন প্রধানমন্ত্রী। দায়িত্বপ্রাপ্তরা সততা, ন্যায়পরায়ণতা এবং ন্যায়বিচারের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আনুগত্যসহ নেতৃত্বের জন্য দৃঢ় মানসিকতা, সততা এবং অন্যান্য গুণাবলিসম্পন্ন কর্মকর্তারা উচ্চতর পদোন্নতির জন্য যোগ্য। যাদের সামরিক জীবনে সফল নেতৃত্বের রেকর্ড রয়েছে, এমন অফিসারদের পদোন্নতির জন্য বিবেচনা করা উচিত।’
সেনাবাহিনীর সদস্যরা সর্বদা জনগণের পাশে থাকে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অত্যন্ত প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে বিশ্বব্যাপী দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরপরই একটি উন্নত, পেশাদার ও প্রশিক্ষিত বাহিনী গড়ে তুলতে ১৯৭২ সালে কুমিল্লায় মিলিটারি অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।’
বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করেন উল্লেখ করে তিনি জানান, তার সরকার বঙ্গবন্ধুর প্রতিরক্ষা নীতি অনুসরণ করে ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়নের মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন অব্যাহত রেখেছে।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
এ টি
প্রধান নির্বাহী - আরেফিন শাকিল, অফিসঃ নদী বাংলা টাওয়ার, শহীদ বুলু স্টেডিয়াম সংলগ্ন, মাইজদী কোর্ট, নোয়াখালী। ফোনঃ 01303-166473