এনবি নিউজ : উত্তরাঞ্চলে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। এতে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে চারদিক। ফলে এসময় হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে হয়। ঘন কুয়াশার কারণে বাস, ট্রেন ও নৌ চলাচলে কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে দেরি করে ছাড়ছে এসব যানবাহন।
শীতের তীব্রতা বাড়ার কারণে সব থেকে বেশি বিপাকে পড়েছেন নদী তীরবর্তী অঞ্চলের শিশু ও বৃদ্ধরা। শীতের কারণে কষ্ট পোহাতে হচ্ছে শিশু ও বয়স্কদের। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে শীতজনিত রোগী। নওগাঁর বদলগাছীতে শুক্রবার সকাল ৬টায় ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রাজশাহীতে শীত বাড়ায় ছিন্নমুল মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।
রাজশাহী : রাজশাহীসহ আশপাশের এলাকায় বাড়ছে শীতের তীব্রতা। সূর্যাস্তের আগেই ঘন কুয়াশায় ঢেকেছে চারপাশ। শুক্রবার বেলা তিনটায় রাজশাহী ও আশপাশের অঞ্চলে সর্বনিন্ম তামপাত্রা নেমেছে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের সহকারী কামাল হোসেন জানান, আকস্মিকভাবে শুক্রবার দিনের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। আবহাওয়া সহকারী আরও জানান, আগামী কয়েকি দন দিনও রাতের তাপমাত্রার খুব বেশি হেরফের হবে না। তবে নদী অববাহিকায় ঘন কুয়াশা পড়বে।
কনকনে ঠাণ্ডায় রাজশাহীর জনজীবনে প্রতিকূল প্রভাব পড়েছে। শ্রমজীবী মানুষকে কাজের সন্ধানে এসে নগরীর মোড়গুলোতে জটলা করতেও দেখা যায়।
কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে শুক্রবার সকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমেছে। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ধরলা নদীর তীরবর্তী এলাকার বাবলু মিয়া বলেন, গত কয়েকদিন ধরে অত্যাধিক কুয়াশা পড়ছে। সেই সঙ্গে হিমেল বাতাসে ঠান্ডা বেড়ে যাওয়ায় কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে। অর্থের অভাবে শীতবস্ত্রও কিনতে পারছি না। একই এলাকার পার্শ্ববর্তী গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম বলেন, শীত উপেক্ষা করে আলু ক্ষেতের পরিচর্চা, বীজতলা তৈরিসহ নানা ধরনের কৃষিকাজ করতে হচ্ছে। কাজ করতে গিয়ে হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে যায়। সর্দি, কাশিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই।
আসন্ন শীতে জেলার গরিব ও দুস্থদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৩৮ হাজার কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব কম্বল ইতোমধ্যে জেলার ৯ উপজেলায় বরাদ্দ করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহিনুর রহমান সরদার জানান, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে বয়স্ক ও শিশু রোগীদের সংখ্যা বেড়েছে। বেডের তুলনায় বর্তমানে দ্বিগুণ পরিমাণ রোগী সেবা নিচ্ছে। ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট ও শীতজনিত রোগ নিয়ে ভর্তি হচ্ছে তারা।
নওগাঁ : আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে ১৬ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলিসিয়াস। বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, আগের দিনের তুলনায় আজ তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। বৃহস্পতিবার বদলগাছীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে নওগাঁয় শীত জেঁকে বসায় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। হঠাৎ করে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় স্থানীয় মানুষ এ আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হিমশিম খাচ্ছেন। শহরের তাজের মোড় এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক আবু বক্কর বলেন, ‘আজকা সকালে গাড়ি চালাতে য্যায়ে ঠান্ডার চোটত (চোটে) হাত-পা ক্যান-ক্যান করিচ্ছি। মনে হচ্ছে হাত-পা জড়ে যাছে। সিএনজি চালানেই কঠিন হয়ে গ্যাছে।
এ টি
প্রধান নির্বাহী - আরেফিন শাকিল, অফিসঃ নদী বাংলা টাওয়ার, শহীদ বুলু স্টেডিয়াম সংলগ্ন, মাইজদী কোর্ট, নোয়াখালী। ফোনঃ 01303-166473