আসাদুজ্জামান তপন : ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজুল হক খান মিল্কী হত্যা মামলার বিচার শুরুর পর চার বছরে সাক্ষ্য দিয়েছেন মাত্র চারজন।
ঢাকার ২ নম্বর দ্রুত বিচার টাইবুনালে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফায় এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ রয়েছে বলে জানান এ আদালতের পেশকার মো. শাহীন আলম।
এনবি নিউজকে তিনি বলেন, প্রথম ধার্য তারিখ ছিল গত বছরের ২০ অক্টোবর। সে সময় কেউ আসেননি সাক্ষ্য দিতে। পরে কয়েকজন সাক্ষীকে ট্রাইবুনালে হাজির করতে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও দেওয়া হয়।
ট্রাইবুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাদিয়া আফরীন শিল্পী এনবি নিউজকে বলেন, “স্পর্শকাতর মামলা বলে এর নথিপত্র ঢাকার বিচারক মো. জাকির হোসেন নিজ দায়িত্বে তার খাসকমরায় রেখে দিয়েছেন। আমি আশা করছি, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম দ্রুত নিষ্পত্তি হবে।“
২০১৩ সালের ২৯ জুলাই রাতে গুলশানে শপার্স ওয়ার্ল্ড নামে একটি বিপণী বিতানের সামনে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক মিল্কীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ওই ঘটনায় মিল্কীর ছোট ভাই রাশেদুল হক খান বাদী হয়ে গুলশান থানায় ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
২০১৪ সালের ১৫ এপ্রিল র্যাব-১ এর সহকারী পরিচালক কাজেমুর রশিদ ঢাকা মহানগর হাকিম তারেক মঈনুল ইসলাম ভূঁইয়ার আদালতে ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।
এরপর বাদীর আপত্তিতে তদন্তের দায়িত্ব পান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী সুপার উত্তম কুমার বিশ্বাস। তিনি ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অধিকতর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
আগের অভিযোগপত্রের ১১ আসামির সঙ্গে আরও সাতজনকে অন্তর্ভুক্ত করে মোট ১৮ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আর নয়জনকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়।
২০১৬ সালের ১৪ মে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত মামলার অভিযোগপত্র আমলে নেন। দুই বছর পর ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর ঢাকার ৫ নম্বর অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত ১৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
ঢাকার পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটির আনুষ্ঠানিক বিচারকার্য শুরু হলে সেখানে ৭৫ সাক্ষীর মধ্যে মাত্র চারজন সাক্ষ্য দেন।
পরে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে পাঠানো হলেও ২০২২ সালের অক্টোবরে প্রথম ধার্য তারিখে কেউ সাক্ষ্য দিতে না আসায় দ্বিতীয় দফায় তারিখ নির্ধারণ করা হয়। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি ট্রাইবুনালে সাক্ষ্যগ্রহণের সেই তারিখ রয়েছে।
আলোচিত এ মামলায় এজাহারনামীয় আসামি ছিলেন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু, যাকে গত বছরের ২৪ মার্চ রাতে ঢাকার শাজাহানপুরে গুলি করে হত্যা করা হয়। তবে মিল্কী হত্যা মামলার অভিযোগপত্র থেকে আগেই তাকে বাদ দেওয়া হয়েছিল।
মামলার ১৮ আসামি হলেন- সাখাওয়াত হোসেন চঞ্চল, মো. আমিনুল ইসলাম ওরফে হাবিব, মো. সোহেল মাহমুদ ওরফে সোহেল ভূঁইয়া, মো. চুন্নু মিয়া, মো. আরিফ ওরফে আরিফ হোসেন, মো. সাহিদুল ইসলাম, মো. ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ, মো. জাহাঙ্গীর মণ্ডল, ফাহিমা ইসলাম লোপা, রফিকুল ইসলাম চৌধুরী, মো. শরীফ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে পাপ্পু, তুহিন রহমান ফাহিম, সৈয়দ মুজতবা আলী প্রকাশ রুমী, মোহাম্মদ রাশেদ মাহমুদ ওরফে আলী হোসেন রাশেদ ওরফে মাহমুদ, সাইদুল ইসলাম ওরফে নুরুজ্জামান, মো. সুজন হাওলাদার, ডা. দেওয়ান মো. ফরিউদ্দৌলা ওরফে পাপ্পু ও মো. মামুন উর রশীদ।
প্রধান নির্বাহী - আরেফিন শাকিল, অফিসঃ নদী বাংলা টাওয়ার, শহীদ বুলু স্টেডিয়াম সংলগ্ন, মাইজদী কোর্ট, নোয়াখালী। ফোনঃ 01303-166473