এনবি নিউজ : আগামী অর্থবছরের (২০২১-২২) বাজেটে রপ্তানি খাতে সব ধরনের কর অপরিবর্তিত থাকছে। এ খাতের উদ্যোক্তাদের চলতি অর্থবছরের মতো করপোরেট কর, রপ্তানি আয়ে উৎসে কর ও নগদ প্রণোদনায় উৎসে কর দিতে হবে।
এছাড়া বাজেটে ইসলামি বন্ড ‘সুকুক’ সম্পর্কে জনসাধারণকে আকৃষ্ট করতে এর মুনাফায় কর অব্যাহতি দেয়া হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বর্তমানে তৈরি পোশাক খাতে করপোরেট কর ১২ শতাংশ। তবে গ্রিন (সবুজ) কারখানা হলে করহার ১০ শতাংশ। এ হার আগামী ৫ বছরের জন্য বলবৎ রাখার প্রস্তাব দিয়েছিল রপ্তানিমুখী সংগঠনগুলো। এছাড়া রপ্তানি আয়ের বিপরীতে দশমিক ৫০ শতাংশ উৎসে কর কর্তন হয়।
এটি কমিয়ে দশমিক ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। এছাড়া নগদ প্রণোদনার ওপর ১০ শতাংশ উৎসে কর কাটা হয়। এটি প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছিল।
এ খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প বর্তমানে দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন চাপের কারণে নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। পোশাকের দরপতন, রপ্তানি প্রবৃদ্ধির ক্রমাগত নেতিবাচক প্রভাব, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, ডলারের বিপরীতে মুদ্রার অবস্থান, প্রতিযোগী দেশগুলো থেকে তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে থাকায় দেশের পোশাক শিল্প সক্ষমতা হারাচ্ছে।
এ অবস্থায় শিল্পের প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনতে আর্থিক প্রণোদনার পাশাপাশি করসংক্রান্ত প্রণোদনার বিকল্প নেই।
টেক্সটাইল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, করোনার সময় শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে শুধু আর্থিক প্রণোদনা দিলে চলবে না। এর সঙ্গে করসংক্রান্ত প্রণোদনাও দিতে হবে। না হলে শিল্পের টিকে থাকা কঠিন হবে।
উদাহরণস্বরূপ সরকার রপ্তানি সম্প্রসারণে ক্যাশ ইনসেনটিভ দিচ্ছে। তা থেকে ১০ শতাংশ উৎসে কর কেটে রাখা হচ্ছে। এ আপৎকালীন সময়ে এত বড় অঙ্কের কর কাটা হলে উদ্যোক্তাদের বেকায়দায় পড়তে হবে।
নিট মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, করোনাকালে করসংক্রান্ত পরিবর্তন না আনা দুঃখজনক। তিনটি রপ্তানিমুখী সংগঠনই এমন অনেক প্রস্তাব দিয়েছিল যেগুলো মেনে নিলে সরকারের রাজস্বের কোনো ক্ষতি হতো না। যেমন শিল্পের মেশিন আনতে ভ্যাট অফিসের প্রত্যয়ন প্রয়োজন হয়। এ বিধান বাতিল করলে সরকারের এক পয়সাও রাজস্ব হাতছাড়া হবে না। আবার উৎসে কর দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। এটি না কমিয়ে আগের মতো রেখে সেটি চূড়ান্ত কর দায় হিসাবে গণ্য করলেও কোনো রাজস্ব ক্ষতি হতো না। এ ধরনের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে না নিলে উদ্যোক্তারা মর্মাহত হবে।
গার্মেন্টস এক্সেসরিজ পণ্য উৎপাদকদের সংগঠন বিজিএপিএমইএ সভাপতি আব্দুল কাদের খান, এক্সেসরিজ খাত দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার। গার্মেন্টস শিল্পে করপোরেট কর ১২ শতাংশ হলেও এক্সেসরিজ খাতকে সাড়ে ৩২ শতাংশ কর দিতে হচ্ছে। অথচ মোট রপ্তানি আয়ের ১৫-২০ শতাংশের অংশীদার এক্সেসরিজ খাত। এ খাতে বৈষম্য দূর করলে নতুন বিনিয়োগ আসবে। তখন এক্সেসরিজ আমদানির প্রয়োজন হবে না।
অন্যদিকে ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক বন্ড ‘সুকুক’কে আকৃষ্ট করতে কর অব্যাহতি দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। ৪ মার্চ এনবিআরে এ বিষয়ে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
বর্তমানে ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ড, ইউএস ডলার ইনভেস্টমেন্ট বন্ড ও ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো উৎস কর দিতে হয় না। কিন্তু সুকুক বন্ডে ৫ শতাংশ উৎসে কর বহাল রয়েছে।
২৮ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো সুকুক বন্ড ইস্যু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বন্ডে বিনিয়োগকারীরা মূলধনের ওপর ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। বন্ডের মেয়াদ পাঁচ বছর। বিনিয়োগকারীরা সুকুক থেকে বছরে দুবার মুনাফার টাকা পাবেন।
এ টি
প্রধান নির্বাহী - আরেফিন শাকিল, অফিসঃ নদী বাংলা টাওয়ার, শহীদ বুলু স্টেডিয়াম সংলগ্ন, মাইজদী কোর্ট, নোয়াখালী। ফোনঃ 01303-166473