গল্প সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে নির্মাতা বলেন, ‘নদীকেন্দ্রিক জীবন এখন আর নেই। সেখানে অভাব বেড়েছে, শিক্ষা নেই, নেই মানবিকতা। সবচেয়ে ভয়ানক হলো অপরাধমূলক কাজ বেড়ে গেছে। তাহলে কেমন আছে সেই কুবের, মালা, কপিলারা? এই সিনেমায় এটাই মূলত আমার দর্শন।’
পরিচালক ও অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই ছবির সঙ্গে জড়িয়ে আছে তাঁদের অনেক শ্রম, অনেক ঘাম। ‘আমাদের পুরো টিমের কাছে ছবিটা একটা যুদ্ধ ছিল। দিনের পর দিন পদ্মা নদীর চরে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে শুটিং করেছি আমরা,’ বলছিলেন রাশিদ পলাশ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ফণীর কবলে পড়ে একবার তো সেটই ভেঙে গেল। পরে আবার নতুন করে সেট বানিয়ে শুটিং সেরেছেন।
রায়হান শশীর চিত্রনাট্যে পদ্মাপুরান প্রযোজনা করছে পুণ্য ফিল্মস। ছবির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রসূন আজাদ, সাদিয়া মাহি, জয়রাজ, সুমিত সেনগুপ্ত, কায়েস চৌধুরী, সুচনা শিকদার, রেশমী, হেদায়েত নান্নু, আশরাফুল আশিষ, সাদিয়া তানজিন। একটি বিশেষ চরিত্র করেছেন শম্পা রেজা । ছবিতে পাঁচটি গান আছে, গেয়েছেন চন্দনা মজুমদার, মুহিন, সৌরিন, আরিফ ও অংকন।
পদ্মাপুরান দিয়ে দীর্ঘদিন পর অভিনয়ে ফিরলেন প্রসূন আজাদ। পাঁচ বছর আগে মুক্তি পেয়েছিল তাঁর অভিনীত ‘মুসাফির’।
প্রসূন বলেন, ‘সিনেমাটিতে কপিলা চরিত্রটি ছিল আমার জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং। গল্প শুনেই মনে করেছিলাম পারব না। শুটিংয়ের গিয়েও ভয়ে ছিলাম। পরে মনে হয়েছে, ঠিকমতো চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি। শুটিংয়ের অভিজ্ঞতাও ছিল কষ্টকর।
একদম আইসোলেটেড এলাকায় শুটিং করেছি। দর্শক কীভাবে নেবেন, এটা ভাবতেই কিছুটা নার্ভাস লাগছে। আমরা চাইছি পদ্মাপুরান–এর গল্পটা সব শ্রেণির দর্শক দেখার সুযোগ পাক।’ আরেক অভিনেত্রী সাদিয়া মাহির কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে এই ছবি। ছবিতে গোলাপি চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। পর্দায় তাঁর নবজাতকের নাম ছিল পদ্মা। গত মাসে ছবিটির টিজার মুক্তির দিনে মাহির জীবনে এসেছে আরেকটি সুসংবাদ—প্রথম সন্তানের মা হয়েছেন এই অভিনেত্রী। মেয়ের নাম রেখেছেন পদ্মা।
আজ থেকে ঢাকায় স্টার সিনেপ্লেক্স, শ্যামলী, যমুনা ব্লকবাস্টারে, নারায়ণগঞ্জের সিনেস্কোপ এবং চট্টগ্রামের সুগন্ধা হলে মুক্তি পাচ্ছে ছবিটি। আক্ষেপ করে পরিচালক বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করলেই সারা দেশে অনেক হলে ছবিটি মুক্তি দিতে পারতাম। কিন্তু মুক্তি দিয়ে কী লাভ বলেন, এখন ছবি রিলিজ দিতে হলে উল্টো হলের মালিকদের টাকা দিতে হয়। সে টাকা ফেরত পাবেন কি না, তার নিশ্চয়তা নেই। টাকা দিয়েই তো হলমালিকেরা সিনেমা নেবেন। সেটাই তো নিয়ম। তাই আমার সিনেমার টার্গেট, দর্শক যাঁরা, তাঁদের জন্যই আমরা সিনেপ্লেক্সগুলোকে গুরুত্ব দিয়েছি।’
সর্বশেষে দর্শকদের উদ্দেশে বিনীতভাবে একটা অনুরোধই করলেন পরিচালক রাশিদ পলাশ, ‘সবাইকে অনুরোধ হলে গিয়ে পদ্মাপুরান দেখুন। আমাদের ছবি যদি আমরাই না দেখি, তাহলে এই ইন্ডাস্ট্রি দাঁড়াবে কীভাবে?’