এনবি নিউজ : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপির জন্ম গণতন্ত্রকে মাথায় রেখে। জনগণকে সাথে নিয়ে তাদেরকে আস্থায় রেখে পথ চলছে। বিএনপি কেনো আগুন নিয়ে খেলবে। বিএনপির সাথেতো মানুষ আছে। কিন্তু অতীতে কারা আগুন নিয়ে খেলেছে কিভাবে খেলেছে সবই আমরা জানি।
আজ বুধবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আমীর খসরু।
এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ)।
আমির খসরু বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক সরকার ও আইনের শাসন ফিরে আসলে আগুন সন্ত্রাসীদের বিচার হবে। যারা গুম খুন ও ক্রসফায়ার বা পুলিশের হেফাজতে হত্যা করেছে তাদের বিচার হবে। যারা অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দশ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে তাদের বিচার হবে। শেয়ার বাজার লুট করেছে তাদের বিচার হবে। কোনো ক্যাংগারু কোর্টে বিচার হবে না।
তিনি বলেন, অতি অল্প সময়ের মধ্যেই জিয়াউর রহমান দেশের বিভিন্ন খাতে অভূতপূর্ব সংস্কার এবং উন্নয়ন করেছেন। এটাই জিয়াউর রহমানের বড় বৈশিষ্ট্য। তার সাথে কোনো রাজনীতিবিদের তুলনা হয় না। তার মতো সংস্কার দেশের কোনো শাসক করেনি। সব শাসক এখন করলেও তার সমান হবে না। তাকে জর্জ ওয়াশিংটনের মতো তুলনা করা চলে। জিয়াউর রহমান সম্মুখসমরে যুদ্ধ করেছেন। সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধকালে নেতৃত্ব দিয়েছেন। দেশের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তার সাথে তো আর কারো তুলনা হয় না।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্বাদ কিন্তু জিয়াউর রহমান দিয়েছেন। যে চিন্তা ও আকাঙ্খা থেকে যুদ্ধ হয়েছিল তার স্বাদ কিন্তু ৭ নভেম্বরের উত্থানের পর জাতি পেয়েছে। এরপরই বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থেই দেশের উন্নয়নের সূচনা লাভ করে। মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু করেন। দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন। তার মন্ত্রীসভা গঠিত হয়েছিল দেশের সবচেয়ে মেধাবীদের সমন্বয়ে। তিনিই দেশে মেধাবী রাজনীতি শুরু করেছিলেন।
আমীর খসরু বলেন, শেখ হাসিনার পরবর্তী বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে অবশ্যই মেধা ভিত্তিক রাজনীতিকে প্রাধান্য দিতে হবে। এজন্যই বিএনপি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ গঠনের কথা বলছে। যারা পেশীশক্তি দিয়ে রাজনীতি করতে পারে না। অর্থ নেই কিন্তু মেধা আছে তারাতো সমাজেরই অংশ। তাদেরকে নিয়েও আমরা আপার হাউজ এবং লওয়ার হাউজ সংসদ গঠন করা হবে।
তিনি আরো বলেন, বিএনপির আগামী দিনের রাজনীতিতে মেধাবীদের সমন্বয় ঘটবে। এক্ষেত্রে পেশাজীবীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ দেশকে শেখ হাসিনা যেখানে নিয়ে গেছে সেখান থেকে বের হতে হলে নতুন নতুন চিন্তা করতে হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আমাদের গণজাগরণ শুরু হয়েছে। বাঁধ ভেঙেছে। জনগণের জোয়ার উঠেছে। জনগণ আমাদের গণসমাবেশে কিভাবে অংশগ্রহণ করছে সবাই জানেন। এতো পরিবর্তন অতীতে মানুষ কখনো দেখেনি। আমরা তো কাউকে কিছু দিচ্ছি না। তবুও মানুষ দুই দিন তিন দিন ধরে রাস্তায় খেয়ে না খেয়ে পড়ে থাকছে। কেউ খেতেও পারছে না ভালোমতো। নারী পুরুষ সবাই আসছে। এটাই হলো দেশের প্রতি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতি ভালোবাসা। এখন আমাদের আন্দোলন বিপ্লবের পর্যায়ে চলে গেছে। আমরা সেই বিপ্লব নিয়ে সামনে এগোচ্ছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ চায় আমাদেরকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে বিভ্রান্ত করতে চায়। কিন্তু আমরা সেদিকে গুরুত্ব দিই না। শুধু নির্ভয়ে সামনে এগোচ্ছি। সবাই এগিয়ে যান। বিএনপি কোনো আগুন সন্ত্রাস করে না। এটা হচ্ছে ষড়যন্ত্রমূলক কথা। আগুন নিয়ে নাটক হচ্ছে। অতীতে যেভাবে বিএনপির নামে কলঙ্ক লেপনের চেষ্টা করেছে। বিএনপি ভদ্র লোকের দল। তারা লগি বৈঠা চেনে না। ক্রসফায়ার চেনে না। মিথ্যা মামলা জানে না। এসব জানে আওয়ামী লীগ। তারাই আগুন নিয়ে নাটক করছে।
জেডআরএফের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুসহ অন্যান্যরা।
এ টি