চোখেমুখে লেপ্টে থাকা একরাশ স্বপ্ন, কপালে চিন্তার ভাঁজ—উচ্চশিক্ষা অর্জনের আশায় মাস্টার্সে ভর্তি হতে নোয়াখালী সরকারি কলেজে আসেন শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী সাগর হোসেন।নোয়াখালী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের উত্তর ফকিরপুরের বাসিন্দা সাগরের বাবা বহু আগে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। দুই বোনসহ তিন ভাইবোনের সবাই শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী। পরিবারে আর্থিক অনটন চরম পর্যায়ে থাকলেও সাগর পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে।
তার স্বপ্ন ছিলো পড়ালেখা শেষ করে সরকারি চাকরি পাওয়া, বিসিএস ক্যাডার হয়ে পরিবারের হাল ধরা। ২০২২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সোনাপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে বি.এস.এস (পাস) কোর্সে ৩.০০ সিজিপিএ পেয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। তবে মাস্টার্সে ভর্তি হওয়াকে কেন্দ্র করে পড়তে হয় কঠিন আর্থিক সংকটে।শেষ পর্যন্ত ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষে নোয়াখালী সরকারি কলেজে প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্সে ভর্তি হন সাগর। ভর্তি হতে আসার সময় হুইলচেয়ার রিকশায় ভর দিয়ে কলেজে প্রবেশের দৃশ্যটি চোখে পড়ে নোয়াখালী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বিশালের।বিষয়টি জানার পর বিশাল এগিয়ে এসে সাগরের খোঁজখবর নেন এবং সব শুনে তার পড়াশোনার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন এই ছাত্রনেতা।
এ বিষয়ে সাগর হোসেন বলেন, অভাব অনটনের মধ্যেও অনেক কষ্টে ডিগ্রি শেষ করেছি। মাস্টার্সে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। বিশাল ভাই আমার পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছেন—এর জন্য আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। আল্লাহ যেন তাকে উত্তম প্রতিদান দেন। আমার স্বপ্ন ছিলো বিসিএস দেওয়া, তবে পরিবারের কেউ উপার্জনক্ষম না থাকায় এখন যেকোনো সরকারি চাকরি পেলেই চলবে। আমি অনুদান চাই না, শুধু চাই কাজের সুযোগ।
অন্যদিকে ছাত্রদল নেতা বিশাল বলেন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সব সময় শিক্ষার্থীদের পাশে থাকে। দেশনায়ক তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করছি। একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে আমি নোয়াখালী কলেজের এই শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর পড়াশোনার দায়িত্ব নিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, ভবিষ্যতেও শিক্ষার্থীদের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকব।