• রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৪ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম:
বিএনপি কর্মী সর্বস্ব রাজনৈতিক দল নয়, বিএনপি জনসমর্থন ভিত্তিক রাজনৈতিক দল – মোঃ শাহজাহান Знакові постаті: роль у медицину, комерцію, культуру та інші галузі. ডাঃ ঝুমা অফিস টাইমে দেখেন রোগী, ডিগ্রি ছাড়া করেন অপারেশন ডাঃ ঝুমা অফিস টাইমে দেখেন রোগী, ডিগ্রি ছাড়া করেন অপারেশন Probabilità Di Vincita Gratta E Vinci Qual È 13 নোয়াখালীতে আন্দোলনে আহত ছাত্রদের আর্থিক সহায়তা দিলেন তারেক রহমান ‘মৎস্য খামারে সন্ত্রাসী হামলা-ভাঙচুর’ হাসপাতাল থেকে আহতদের চিকিৎসা ফাইল গায়েব নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক বাপ্পিকে সংবর্ধনা উপজেলা নির্বাচন প্রার্থিতা ফিরে পেলেন ওবায়দুল কাদেরের ভাই নোয়াখালীর চাটখিলে ভুমি নিয়ে বিরোধ, আহত ৪, গ্রেফতার ২

ভারতে নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশি তরুণী উদ্ধার, বাধ্য করা হয়েছিল পতিতাবৃত্তিতে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ৩০ মে, ২০২১ সংবাদটির পাঠক ৩ জন

 

এনবি নিউজ : ভারতের বেঙ্গালুরুতে যৌন নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশি তরুণীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। কেরালা রাজ্যের কোঝিকোড়িতে গত শুক্রবার শনাক্ত করার পর তাঁকে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যাওয়া হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুতে গতকাল শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এদিকে, অনেক খোঁজাখুঁজির পর সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওর সূত্র ধরে পরিবারের সদস্যেরা ওই তরুণীকে শনাক্ত করেন।

এরই মধ্যে ভিডিওর সূত্র ধরে গত শুক্রবার বেঙ্গালুরুতে সেখানকার পুলিশ ঘটনার মূল হোতা রিফাতুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়সহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে দুজন নারীও রয়েছেন। গ্রেপ্তার করা ছয়জনের মধ্যে দুই যুবক পালাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই তরুণীর বয়স যখন ২০, তখনই আসামিদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এর মধ্যে দুজন তাঁর দূর সম্পর্কের আত্মীয় বলে জানা গেছে।

নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী রাজধানী ঢাকার মগবাজার এলাকার বাসিন্দা। সৌদি আরবে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন ওই তরুণী। দুবছর আগে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাঁর। তাঁকে উদ্ধার করা বেঙ্গালুরু পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এরই মধ্যে ওই তরুণী দুবাই গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁকে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়েছিল এবং প্রায় এক বছর ধরে তিনি সেখানকার একটি পানশালায় (বার) নর্তকীর কাজও করেছিলেন। কয়েক মাস আগে ওই তরুণী তাঁর দূর সম্পর্কের আত্মীয় মোহাম্মদ বাবা শেখের কথায় ভারতে ফেরেন। বাবা শেখ নিজেও একটি পতিতাবৃত্তি চক্রের সদস্য।

এদিকে, বাবা শেখ ও তাঁর সহযোগীরা বাংলাদেশ থেকে আসা নারীদের ভারতে বিউটি সেলুন ও গৃহকর্মীর কাজ জুটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেখিয়ে পাচার করতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁরা কর্ণাটক, তেলেঙ্গানা ও কেরালায় পতিতাবৃত্তি চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী তরুণী ওই দলের সঙ্গেই যোগ দিয়েছিলেন। এরপর তিনি কোঝিকোড়িতে গিয়ে একটি মাসাজ পার্লার খোলেন। এরপর থেকেই অভিযুক্তদের সঙ্গে তাঁর আর্থিক বিরোধ ঘটে।

পুলিশ জানায়, আর্থিক কলহ মেটানোর কথা বলে ওই তরুণীকে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে আসা হয়েছিল। তিনি একটি ঘরে ঢুকতেই অভিযুক্তরা সহিংস হয়ে ওঠে। তাঁকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়, যৌন নির্যাতন চালানো হয় এবং ফোনে ভিডিও ধারণ করা হয়।

পুলিশের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ছাড়াও অভিযুক্তদের মোবাইল থেকে আমরা আরও দুটি ভিডিও উদ্ধার করতে পেরেছি। ওই তরুণীকে ব্ল্যাকমেইল করার জন্য ওই ভিডিওগুলো ধারণ করা হয়েছিল। অর্থ না দিলে তারা ওই ভিডিওগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল।’

এমন নির্যাতনের পর ওই তরুণী পুলিশের সাহায্য না নিয়ে তাঁর প্রেমিককে ফোন দিলে, একদিন পর ওই ঘর থেকে তরুণীকে উদ্ধার করেন তাঁর প্রেমিক। এরপর তাঁরা কোঝিকোড়িতে চলে যান।

এদিকে, উদ্ধারের পর গত শুক্রবার রাতে বেঙ্গালুরুতে ওই তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়।

এদিকে, ওই তরুণীকে অপহরণ ও তাঁর ওপর এমন বর্বরোচিত নির্যাতনের ঘটনা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরে চরম ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত তাঁর মা, আত্মীয়-স্বজনসহ, পাড়া-প্রতিবেশী। সবাই ওই তরুণীকে দ্রুত উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

নির্যাতিত তরুণীর মা বলেন, ‘আমার মেয়ে এতদিন কোথায় ছিল আমরা জানতাম না। এখন মেয়েকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হোক এবং যারা অত্যাচার করেছে তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। সরকারের কাছে আমার এই চাওয়া।’

একই দাবি জানিয়েছেন বাড়িতে থাকা ওই তরুণীর দুই চাচাসহ অন্য স্বজনেরা।

ওই তরুণীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২৫ বছর ধরে ওই তরুণীর পরিবার ঢাকায় মগবাজারে বসবাস করত। তার বাবা ঢাকায় ফুটপাতে ফলের শরবত বিক্রি করতেন। সাত বছর আগে মগবাজার এলাকার বাসিন্দা চাঁদপুরের এক ছেলের সঙ্গে প্রেম করে ওই তরুণীর বিয়ে হয়। তাদের তিন বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে।

প্রায় দেড় বছর আগে মেয়েটি মগবাজারে তার স্বামীর বন্ধু ঘটনার মূলহোতা রিফাতুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়ের প্ররোচণায় দুবাই যাওয়ার মনস্থির করেন। সম্ভবত টিকটক হৃদয় ও তার বন্ধুদের ফাঁদে পা দিয়েই ওই তরুণী ভারতে পাড়ি জমান বলে ধারণা পুলিশের।

এ ঘটনায় ঢাকার হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা করেছেন নির্যাতনের শিকার মেয়েটির বাবা। এ ছাড়া বেঙ্গালুরুতেও ধর্ষণ, নির্যাতন ও অন্যান্য অভিযোগে আরেকটি মামলা করা হয়েছে ছয়জনের বিরুদ্ধে।

রিফাতুল ইসলাম হৃদয় ওরফে ‘টিকটক হৃদয় বাবু’ একটি আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য বলে দাবি করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইসহ বেশ কয়েকটি দেশে এই চক্রটি বিস্তৃত।

ওই তরুণীকে নির্যাতনের ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের পুলিশ। তাদের গ্রেপ্তারের এ খবর জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশও। তাদের মধ্যে চারজনের নাম জানানো হয়েছে। তারা হলেন সাগর, মোহাম্মদ বাবা শেখ, হৃদয় বাবু ও হাকিল। গ্রেপ্তার নারীর নাম জানানো হয়নি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনারের কার্যালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিসি মো. শহিদুল্লাহ দাবি করেন, বিভিন্ন সময় এই চক্রের সদস্যেরা বেশ কয়েকজন নারীকে পাচার করেছে। তিনি বলেন, ‘হৃদয় বাবুসহ চক্রের সবার বয়স ২০ থেকে ২৫ এর মধ্যে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল ও ভারতের কয়েকটি রাজ্যের কিছু অপরাধী মিলে সংঘবদ্ধ আন্তর্জাতিক মানবপাচার চক্রটি গড়ে তুলেছে। চক্রটির নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ, ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের দুবাইসহ কয়েকটি দেশে বিস্তৃত। স্কুল-কলেজপড়ুয়া বখে যাওয়া তরুণী থেকে গৃহিনী পর্যন্ত সবাই এ চক্রের টার্গেট।’

মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘ভাইরাল ভিডিওটির ঘটনায় জড়িত সব বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জেনেছে পুলিশ। টিকটক হৃদয়সহ কয়েকজন আন্তর্জাতিক পাচারকারী চক্রের সহায়তায় অবৈধভাবে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। মূলত টিকটক ভিডিও তৈরি করতে গিয়ে তরুণ-তরুণীরা একটি ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হয়। গ্রুপটির মূল পৃষ্টপোষক মূলত আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রটি। এই গ্রুপের অ্যাডমিনের তত্ত্বাবধানে গত বছরের শেষের দিকে ঢাকার পার্শ্ববর্তী এক জেলার একটি রিসোর্টে ৭০০ থেকে ৮০০ জন তরুণ-তরুণী পুল পার্টিতে অংশ নেয়। ওই পার্টির অন্যতম সমন্বয়কারী ছিল রিফাতুল ইসলাম ওরফে টিকটক হৃদয় বাবু।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এই গ্রুপে সুনির্দিষ্ট কিছু সদস্য আছে, যারা গ্রুপের নারী সদস্যদের ভারতের বিভিন্ন মার্কেট, সুপারশপ, বিউটি পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দিয়ে পাচার করে। এই চক্রের মূল আস্তানা বেঙ্গালুরুর আনন্দপুর এলাকায়। মূলত যৌনবৃত্তিতে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যেই বিভিন্ন বয়সের মেয়েদেরকে ভারতে পাচার করা হয়। চক্রটি ভারতের কয়েকটি রাজ্যের কিছু হোটেলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। যে হোটেলগুলোতে চাহিদামাফিক বিভিন্ন বয়সের মেয়েদেরকে পাঠানোর তথ্য পেয়েছে পুলিশ।’

তরুণীকে নির্যাতনের এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী তরুণীর বাবা ডিএমপির হাতিরঝিল থানায় মানব পাচারকারী আইন ও পর্নোগ্রাফি অ্যাক্টে একটি মামলা করেছেন। এ বিষয়ে মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।


এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭৩০  

নামাজের সময় সূচি

    Dhaka, Bangladesh
    শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪
    ওয়াক্তসময়
    সুবহে সাদিকভোর ৫:০০ পূর্বাহ্ণ
    সূর্যোদয়ভোর ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ
    যোহরদুপুর ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ
    আছরবিকাল ২:৫০ অপরাহ্ণ
    মাগরিবসন্ধ্যা ৫:১১ অপরাহ্ণ
    এশা রাত ৬:৩০ অপরাহ্ণ