ময়ফুল বিবি বলেন, ‘আমার স্বামীরে লাইয়া ঢাকায় মাইয়ার বাসায় ব্যাড়াইতে গ্যাছিলাম। অনেক দিন পর লঞ্চে দ্যাশে ফেরতে আছিলাম। কিন্তু আমার স্বামী তো ফিরল না।’
কয়েকজন যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, ঝালকাঠির নলছিটির কাছে আসতেই লঞ্চের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। কিন্তু লঞ্চ কর্তৃপক্ষ পাড়ে ভেড়ানোর চেষ্টা করেনি। পরে আগুন বেশি ছড়িয়ে পড়লে সদরের চর ভাটারকান্দা গ্রামের চরে ভেড়ানোর চেষ্টা করেন লঞ্চটির চালক। কিন্তু সেখানের চরে লঞ্চটি না আটকে ওপারের দিয়াকুল গ্রামে গিয়ে ভেড়ে। এই সময়ের মধ্যে হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যায়।
লঞ্চযাত্রী বরগুনার লাকুরতলার সীমা আক্তার (৪০) বলেন, লঞ্চে আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে পাড়ে ভেড়ালে হতাহত কম হতো। এ ক্ষেত্রে লঞ্চ কর্তৃপক্ষের অবহেলা ছিল। তা ছাড়া লঞ্চে আগুন নেভানোর তেমন ব্যবস্থা ছিল না। ফায়ার সার্ভিসের দল অনেক পরে আগুন নিয়ন্ত্রেণে আনে।
চরভাটারকান্দা গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী কৃষক বেলায়েত হোসেন বলেন, লঞ্চটি চর ভাটারকান্দা গ্রামের চরে আটকাতে পারলে হতাহতের সংখ্যা কম হতো। অনেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যে মারা গেছেন। অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে শতাধিক যাত্রী দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন। বৃদ্ধ, শিশুসহ অনেকে নিখোঁজ। লঞ্চে প্রায় আট শতাধিক যাত্রী ছিলেন।