এদিকে জার্মানির পাহাড়ের ঢালে অবস্থিত দুর্গম লোকালয়ে পৌঁছাতে উদ্ধারকর্মীদের বেগ পেতে হচ্ছে। এই দুর্যোগময় পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে জার্মানির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যে নর্থ রাইন ভেস্টফালৎস ও রাইনল্যান্ড ফ্যালৎস রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। জার্মানির উপদ্রুত অঞ্চলে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১০৮ জন মারা গেছে। নিখোঁজ ১ হাজার ৩০০ জনের বেশি মানুষ। তবে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া জরুরি সেবাব্যবস্থা চালু করতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছে রাইনল্যান্ড ফ্যালৎস রাজ্য সরকার।
এ বন্যা প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সফররত জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘হঠাৎ এ বিপর্যয়ের কারণে আমি হতবাক হয়েছি।’ বন্যাপীড়িত অঞ্চলে নিহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি
জার্মানির প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টাইনমায়ার দুর্গত অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। গতকাল বার্লিনে জার্মানির প্রেসিডেন্ট বলেন, পুরো জার্মানি বন্যাদুর্গতদের পাশে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃতির এই তাণ্ডব আমাকে স্তম্ভিত করেছে।’
গত বুধবার সারা দিন ও বৃহস্পতিবার রাতজুড়ে ব্যাপক বৃষ্টির কারণে পর্যটনস্থলখ্যাত রাইন ও মোজেল নদীর অববাহিকায় অবস্থিত শহরগুলো বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে। মুষলধারে একটানা বৃষ্টির কারণে পাহাড়ি নদীগুলোর পানি কূল উপচে তীব্র বেগে রাস্তা ও বাড়িঘরে ঢুকে বড় রকমের ক্ষয়ক্ষতি ঘটিয়েছে।
জার্মানির পাশাপাশি বেলজিয়ামেও বন্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বেলজিয়ামে বন্যায় মৃত মানুষের সংখ্যা ২০ ছাড়িয়েছে। দেশটির একটি অঞ্চলরে প্রায় ২১ হাজার মানুষ বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্দ্রা দি ক্রো এই বন্যাকে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রকৃতি বিপর্যয় হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। এ ছড়া আগামী মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।
নেদারল্যান্ডস ও লুক্সেমবার্গেও বন্যা পরিস্থিতির নাজুক অবস্থা। নেদারল্যান্ডসের মাসত্রিস শহর থেকে হাজারো মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন বলছে, প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় এমন ভয়াবহ অবস্থা দাঁড়িয়েছে। বড় নদীগুলোর পানি বেড়ে তীর ছাড়িয়ে লোকালয়ে ঢুকেছে। অসংখ্য বাড়িঘর ধসে পড়েছে।