বৃহস্পতিবার বৃটিশদের হাত থেকে স্বাধীনতা লাভের ১০২তম বার্ষিকীতে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর আসাদাবাদে বিক্ষোভে তালেবান যোদ্ধাদের গুলিতে বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছে বলে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন।
তবে তালেবানের গুলি নাকি তাদের তাড়া খেয়ে হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, তা স্পষ্ট হওয়া যায়নি।
একইদিন কাবুলের কাছে এক সমাবেশের কাছেও গুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন আরেক প্রত্যক্ষদর্শী। তবে এখানে তালেবান যোদ্ধারা আকাশে গুলি ছুড়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের ৫ হাজার ২০০-রও বেশি সেনা কাবুল বিমানবন্দর পাহারা দিচ্ছে, স্থাপনাটির একাধিক ফটকই এখন খোলা।
কূটনীতিক, মার্কিন নাগরিক ও কিছু আফগানকে সরিয়ে নেওয়ার অভিযানের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক যুদ্ধবিমানও কাবুলের ওপর চক্কর খাচ্ছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, কাবুল বিমানবন্দরে এখন ‘সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা’ ৬ হাজার মানুষ অপেক্ষা করছেন, শিগগিরই তাদের বিমানে তুলে দেওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৭৯২ মার্কিন নাগরিক ও যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দাসহ মোট ৬ হাজার ৭৪১ জনকে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে বলে কংগ্রেসনাল এক ব্রিফিংয়ে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
রয়টার্স লিখেছে, মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে তালেবানের আফগানিস্তান দখল কট্টর এ ইসলামপন্থি গোষ্ঠীটির অনেক নেতাকেও বিস্মিত করেছে।
রোববার কাবুল দখলের পর থেকে তালেবান নিজেদেরকে আগের তুলনায় ‘অনেক বেশি উদার’ দেখাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বলেছে, তারা শান্তি চায় এবং পুরনো শত্রুদের বিরুদ্ধে তারা প্রতিশোধ নেবে না।
ইসলামী আইন অনুযায়ী নারীদের অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানো হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছে তারা।
শুক্রবার জুমার নামাজের আগে তারা আফগান ঐক্যের তাগিদ দিয়েছে। লোকজন যেন আফগানিস্তান ছেড়ে না যায়, তা বোঝাতে ইমামদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।
আগেরবার, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যখন তারা ক্ষমতায় ছিল, তখন নারীদের পড়াশোনা বা চাকরির সুযোগ ছিল না, ঘরের বাইরে বের হওয়ার সময় পুরুষ অভিভাবকের অনুমোদনও লাগত।
সেসময় জনসমক্ষে মৃত্যুদণ্ড ছিল নিয়মিত ঘটনা। প্রাচীন সব বুদ্ধমূর্তিসহ অসংখ্য নিদর্শনও গুড়িয়ে দিয়েছিল তারা। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বাহিনীর অভিযানে তারা ক্ষমতাচ্যুত হয়।