এনবি নিউজ : কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালী ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি মাদ্রাসায় হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ছয় জনে পৌঁছেছে। নিহত ব্যক্তিরা সবাই ওই মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় আহত অবস্থায় রয়েছে আরও আট থেকে নয় জন।
পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বালুখালী ১৮ নম্বর ক্যাম্পের এইচ-৫২ ব্লকে অবস্থিত দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ মাদ্রাসায় এই হামলা চালায় দুষ্কৃতকারীরা। এরই মধ্যে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে অস্ত্রসহ একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত রোহিঙ্গারা হলেন—মাদ্রাসার শিক্ষক ও হাফেজ মো. ইদ্রীস (৩২), ইব্রাহীম হোসেন (২২), ছাত্র আজিজুল হক (২৬), ক্যাম্পের স্বেচ্ছাসেবক মো. আমীন (৩২), মাদ্রাসার শিক্ষক নুর আলম ওরফে হালিম (৪৫) ও মাদ্রাসার শিক্ষক হামিদুল্লাহ (৫৫)। এ ছাড়া নুর কায়সার (১৫) নামের আহত এক ছাত্রের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক পুলিশ সুপার (এসপি) শিহাব কায়সার জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উখিয়া বালুখালী ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় গোলাগুলি এবং ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলে চার রোহিঙ্গা নিহত হন। এ সময় আহত হন আরও ১০ থেকে ১২ জন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে আরও দুজনের মৃত্যু হয়।
এসপি শিহাব কায়সার আরও জানান, ঘটনার পরই এপিবিএন পুলিশ এবং জেলা পুলিশ বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিহতদের উদ্ধার এবং অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত একজনকে আটক করা হয়েছে।
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে ৮ এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মোহাম্মদ কামরান হোসেন জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর বালুখালী ১৮ নম্বর ক্যাম্পের এইচ-৫২ ব্লকে অবস্থিত দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ মাদ্রাসায় রোহিঙ্গা দুষ্কৃতকারীরা হামলা চালায়। ওই হামলায় মাদ্রাসায় অবস্থানরত চার জন রোহিঙ্গা সদস্য নিহত হন। এ ঘটনার খবর পেয়ে ময়নারঘোনা এপিবিএন পুলিশ ক্যাম্প-১২-এর সদস্যেরা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও দুই রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়।
মোহাম্মদ কামরান হোসেন আরও জানান, নিহত ব্যক্তিদের সবাই মাদ্রাসার শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী। তাঁরা গুলিবিদ্ধ এবং ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ একটি দেশীয় লোডেড ওয়ান শুটারগান, ছয়টি গুলি ও একটি ছুরিসহ একজনকে হাতেনাতে আটক করতে সক্ষম হয়। তাঁর নাম মুজিব বলে জানা গেছে। এদিকে উখিয়া থানা পুলিশের পক্ষ থেকে লাশের সুরতহাল এবং মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা মুহিব্বুল্লাহ। এ ঘটনার পর থেকেই পুরো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এপিবিএন পুলিশ এবং জেলা পুলিশ সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত অর্ধশত সন্ত্রাসী আটক হয়েছে।