এনবি নিউজ : গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে মাকে প্রার্থী করে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে হারিয়ে দেওয়ার পর সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, এখানে দলের প্রার্থী নির্বাচন ঠিক ছিল না।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ভোটে মায়ের বিজয় ঘোষিত হওয়ার পর তিনি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “এখানে নৌকার পরাজয় হয়নি, ব্যক্তির পরাজয় হয়েছে। আর কিছু বললাম না।”
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন আজমত উল্লা খান। তাকে ১৬ হাজারের বেশি ভোটে হারান টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা।
২০১৩ সালে গাজীপুরে এই আজমতকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী করলে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর। নানা নাটকীয়তার তিনি সেবার ভোটের মাঠ ছাড়লেও আজমত হেরে যাওয়ার পর সেবারও তিনি বলেছিলেন, প্রার্থী নির্বাচনে ‘ভুল করেছে’ তার দল।
এর পরের ভোটে দলের মনোনয়ন নিয়ে জাহাঙ্গীর বিজয়ী হলেও দুই বছর আগে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের পর দল থেকে বহিষ্কৃত হন, মেয়র পদও হারান।
এবার ভোটের আগে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হলেও আবার আজমতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেন জাহাঙ্গীর। তার মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও মাকে প্রার্থী করে আজমতের সঙ্গে দ্বৈরথে নামেন জাহাঙ্গীর। সে কারণে আবারও দল থেকে বহিষ্কৃত হন।
তবে ভোটের লড়াইয়ে জয়ের পর তিনি বলেন, “যিনি মার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন, আমি বলেছি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে না, কোনো সরকারের বিরুদ্ধে না; আমি ব্যক্তির বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছি, তারপরও উনার কাছে যাবো, সহযোগিতা চাইব।”
বঙ্গতাজ মিলনায়তনে ফল পরিবেশনের কেন্দ্রে উল্লসিত সমর্থকদের মাঝে থেকে জাহাঙ্গীর বলেন, “আমার উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে ১৮ মাস দায়িত্ব থেকে দূরে রাখা হয়েছিল। আজকে গাজীপুরের মানুষ এর উত্তর দিয়েছে। আমার মাকে মেয়র হিসেবে কাজ করার দায়িত্ব দিয়েছেন গাজীপুরের মানুষ।”
মায়ের হয়ে তিনি গাজীপুরবাসীকে ‘স্মার্ট সিটি’ উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
জাহাঙ্গীর বলেন, “আমি নাম বলতে চাই না। এখানে জয় পরাজয় নেই। ব্যক্তির দায় কেউ নেবে না। আমি এখানকার পরীক্ষিত লোক। চারবার আমি বিভিন্ন জায়গায় জনপ্রতিনিধি ছিলাম।”
এই নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে তার অবস্থান ছিল না মন্তব্য করে সাবেক এই মেয়র বলেন, “এই গাজীপুরের সিটি করপোরেশন নির্বাচন আমার বাঁচা মরার মত একটা নির্বাচন ছিল। আমার মা আমাকে জন্ম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন এই শহরের ওপর, তোমার ওপর অত্যাচার হয়েছে। আমি মা হয়ে ঘরে বসে থাকতে পারি না।
“পরবর্তীতে আমার মা বলেছেন, যে ব্যক্তি তোমার ক্ষতি করেছে, তার বিরুদ্ধে আমি দাঁড়িয়েছি। সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আমার মায়ের জয় হয়েছে। গাজীপুরের ভোটারদের জয় হয়েছে।”