সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, দুর্নীতি চলছে, দুর্নীতি এখন সর্বব্যাপী। তবে আমলাতন্ত্রের সংস্কার ছাড়া এটা বন্ধ হবে না।
এজন্য স্বাধীন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করেছে দুদক।
দুদক চেয়ারম্যান আরও বলেন, দুদক যখন বছরজুড়ে দুর্নীতিমুক্ত দেশ গঠনে কাজ করছে, তখন উন্নয়ন সংস্থাগুলো বিদেশি টাকায় দিবসকেন্দ্রিক মানববন্ধনে ব্যস্ত বলে মন্তব্য করেন দুদক চেয়ারম্যান। এ সময় আর্থিক খাতের দুর্নীতির জন্য দুর্বল তদারকি ব্যবস্থাকে দায়ী করেছে দুদক।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, আমলাতন্ত্রের সংস্কার না হলে দুর্নীতি কমবে না। এ সময় তিনি সিভিল সার্ভিস সংস্কার কমিশন গঠনের পরামর্শ দেন। এছাড়া সরকারি ২৮টি সংস্থায় গবেষণা করে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশমালা জমা দেয়া হয় বলেও তিনি জানান। একই সঙ্গে দুদকের থানা পর্যায়ে পুলিশ ক্যাডার থেকে একজন করে কর্মকর্তাকে নিয়োগ দানে সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে দুদক।
স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশনের যাত্রা ২০০৪ সালে। এরপর থেকে প্রতি বছরই রাষ্ট্রপতির কাছে বার্ষিক প্রতিবেদন জমা দেয় দুদক।
২০১৯ সালে বার্ষিক প্রতিবেদনের পরিসংখ্যান বলছে, বিচারিক আদালতে ৬৩ ভাগ মামলায় সাজা হয়েছে; যা ২০১৮ সালের মতোই। তবে ২০১৯ সালে বেড়েছে মামলা দায়েরের সংখ্যা। বার্ষিক প্রতিবেদন ও দুদক বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব তথ্য তুলে ধরেন কমিশনের চেয়ারম্যান।
মতবিনিময় সভায় ২০১৯ সালে কমিশন কার্যক্রমের বিস্তারিত পরিসংখ্যান তুলে ধরে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। তার নির্দেশনা অনুসারেই দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি। বিগত বছরগুলোতে মিডিয়া, সুশীল সমাজ, সমালোচকদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা পেয়েছি।
তিনি বলেন, কমিশনে যোগ দিয়েই বলেছিলাম কমিশন সমালোচনাকে স্বাগত জানাবে। কারণ সমালোচনার মাধ্যমে কর্মপ্রক্রিয়ার ভুল-ত্রুটি উদঘাটিত হয়, যা সংশোধনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানকে পরিশুদ্ধ করা যায়। এখন বলতে পারি কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে বলেই কমিশনে অভিযোগের সংখ্যা বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, গত বছর থেকে ২০১৯ সালে মামলা এবং চার্জশিটের পরিমাণ কিছুটা হলেও বৃদ্ধি পেয়েছে। মামলা এবং চার্জশিটের গুণগতমান নিশ্চিত করার কারণেই কমিশনের মামলায় সাজার হার ৬৩ শতাংশে উন্নীত। ভবিষ্যতে কমিশনের মামলায় সাজার হার হবে শতভাগ। ইতোমধ্যে জেনেছি, ২০২০ সালে কমিশনের মামলায় সাজার হার ৭৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমন্বিত সামাজিক আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। দুদক এক্ষেত্রে প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।
মতবিনিময় সভায় দুদক কমিশনার ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, দুদক বিগত বছরগুলোতে মূলত প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধ কৌশল পরিচালনা করছে। প্রশাসনিক কৌশলে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সহজ।
দুদক কমিশনার এএফএম আমিনুল বলেন, আমরা দিবা-রাত্রি পরিশ্রম করেছি। মামলার অনুসন্ধান-তদন্তের নথি পর্যালোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এজন্য মামলায় সাজার হার বাড়ছে।অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- দুদকের সচিব ড. মুহা. আনোয়র হোসেন হাওলদার, দুদক বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন-র্যাকের সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ফয়েজ।
এ টি / এনবি নিউজ