এনবি নিউজ : ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ভাড়া দ্বিগুণ করার দাবিতে গতকাল শনিবার সারা দেশে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন মালিকেরা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নৌপথে চলাচলকারী যাত্রীরা। তবে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিদ্যমান সংকট নিরসনে আজ রোববার বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, বৈঠকের আগে সমস্যা সমাধানের সম্ভাবনা কম। অন্তত আজ রোববার বিকেল পর্যন্ত নৌপথের যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে।
গতকাল শনিবার বিকেল ৩টা থেকে ঢাকা, বরিশাল, চাঁদপুর, ভোলার মতো নদীবন্দরের অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার লঞ্চগুলো একযোগে চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়।
গত বুধবার সরকার খুচরা পর্যায়ে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটার ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করেছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে এরপর গত শুক্রবার থেকে সারা দেশে পণ্য ও যাত্রীবাহী সড়ক পরিবহণে ধর্মঘট শুরু করেন মালিক ও শ্রমিকরা। সেই ধর্মঘট আজ রোববার তৃতীয় দিনের মতো চলছে। সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির নেতারা জানিয়েছেন, ভাড়া সমন্বয়ের বিষয়ে রোববার সরকারের সঙ্গে তাঁদের বৈঠক রয়েছে। সেখানে সমাধান হলেই পুনরায় বাস ও ট্রাক চলাচল শুরু হবে।
এর মধ্যেই গতকাল বিকেল থেকে লঞ্চ চলাচলও বন্ধ করে দেন মালিকেরা। চলাচলের জন্য মানুষ এখন ভিড় করছেন রেলওয়ে স্টেশনগুলোতে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ লঞ্চ মালিক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি বদিউজ্জামান বাদল গতকাল বিকেলে বলেন, ‘ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর পর আমরা সমিতির পক্ষ থেকে ভাড়া দ্বিগুন করার দাবি জানিয়ে শুক্রবার চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার তাতে সাড়া দেয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই মালিকেরা লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন।’
‘সরকার সবশেষ ২০১৪ সালে লঞ্চের ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছিল। এরপর আর ভাড়া সমন্বয় করা হয়নি। কিন্তু এই সময়ে জ্বালানি তেলের মূল্য শতকরা ২৩ ভাগ বেড়েছে, ইস্পাতের মূল্য ১৯ ভাগ বেড়েছে। এর মধ্যেই ডিজেলের ভাড়া লিটারপ্রতি ১৫ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু ভাড়া তো বাড়েনি। ফলে ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করার দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের।’
বদিউজ্জামান বাদল আরও বলেন, ‘লোকসান দিয়ে তো মালিকপক্ষ লঞ্চ চালাতে পারবে না। তাই লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।’
বিআইডব্লিউটিএ’র সচিব ওয়াকিল নেওয়াজ গতকাল বিকেলে বলেন, ‘লঞ্চ মালিক সমিতির সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছিল। তাঁরা বলেছিলেন, কোনো মালিক যদি নিজের ইচ্ছায় লঞ্চ চালাতে চান, তাহলে তাঁরা চালাতে পারবেন। কিন্তু এর মধ্যেই তাঁরা কেন শনিবার বিকেল থেকে ধর্মঘট ডাকলেন, লঞ্চ বন্ধ করে দিলেন—সেটি আমরা বুঝতে পারছি না।’
আজ ‘রোববার বিকেল সাড়ে ৩টায় লঞ্চ মালিকদের সঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ’র বৈঠক আছে। আশা করছি, বৈঠকে সবকিছুর সমাধান হবে’, যোগ করেন সচিব।