এনবি নিউজ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনেস্কোকে রিমোট লার্নিং এবং অনলাইন শিক্ষাকে বৈশ্বিক জনসম্পদ হিসেবে ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন অনলাইন শিক্ষা একটি ‘নতুন স্বাভাবিক’ (নিউ নরমাল) হিসেবে বিকশিত হয়েছে। খবর বাসসের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মহামারি চলাকালীন, সংস্থান এবং প্রযুক্তির অভাবে স্কুলে ভর্তির হার এবং যুব ও প্রাপ্তবয়স্কদের শেখার ক্ষেত্রে আমাদের কয়েক দশকের অর্জনকে বিপন্ন করে তুলেছে। রিমোট লার্নিং এবং অনলাইন এডুকেশনকে বিশ্বজনীন সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করার জন্য আমি এই অগাস্ট বডিকে (ইউনেস্কো) আহ্বান জানাই।’
কষ্টার্জিত অর্জনগুলোকে মহামারি ক্ষুণ্ন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি বড় ত্রুটি প্রকাশ করেছে।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ডিজিটালাইজেশন, উন্নত পরিসেবা এবং তথ্যের অবাধ প্রবাহ বাড়লেও ক্ষতিকর বিষয়বস্তু ও ঘৃণাত্মক বক্তব্য ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ডিজিটাল সরঞ্জাম এবং প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
‘ইউনেস্কোর মতো বিশ্ব সংস্থাগুলোকে সমস্যাটির সমাধানের কাজ করা উচিত,’ উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বিশ্বের আরও অনেক দেশের জন্যই প্রাণঘাতী বাস্তবতা।
তিনি বলেন, ‘জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর নেতৃস্থানীয় কণ্ঠস্বর হিসেবে, আমরা উচ্চাভিলাষী জলবায়ু অঙ্গীকার গ্রহণ করেছি। ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগের ১০টি কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করেছি এবং আশা করি যে দেশগুলো বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য বেশি দায়ী তারা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে।’
তিনি আরও বলেন, “সামনের সারির দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধানের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ‘আমরা আমাদের অঞ্চলে আইওসি’র একটি শক্তিশালী উপস্থিতি দেখতে চাই।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু আমরা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, একটি শক্তিশালী, গতিশীল, উদ্ভাবনী বহুপাক্ষিক সংস্থার প্রয়োজনীয়তা আগের চেয়ে বেশি অনুভূত হচ্ছে।
তিনি ইউনেস্কোকে বাংলাদেশের সত্যিকারের বন্ধু উল্লেখ করে বলেন, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার মহান আত্মত্যাগকে চিহ্নিত করে ২১শে ফেব্রুয়ারি ‘শহীদ দিবস’ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশে আমরা শিক্ষা নিয়ে একটি টার্গেটেড পন্থা তৈরি করেছি। সুনির্দিষ্ট নীতিগত হস্তক্ষেপের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষায় তালিকাভুক্তি, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় লিঙ্গসমতা এবং বালিকা শিক্ষায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছি।’
তিনি আরও বলেন, দেশের প্রায় ৮৩ হাজার স্কুলে আইসিটি ডিভাইস সরবরাহ করা হয়েছে। প্রায় ৩ লাখ ২৭ হাজার শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সরকার ২০১০ সাল থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক দিয়েছে। এ বছরও প্রায় ৪০ কোটি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করেছে সরকার।
এ টি