এনবি নিউজ : খালেদা জিয়ার চিকিৎসার নামে বিএনপি এতদিন দেশে অপরাজনীতি করেছে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, বিএনপি নেতারা এতদিন মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তি তৈরি করে ষড়যন্ত্র করেছে। তারা বলেছে, খালেদা জিয়াকে বিদেশ না নিয়ে গেলে তিনি মরে যাবেন। তাকে কোনোভাবেই বাঁচানো যাবে না। শেষ পর্যন্ত আমরা দেখলাম, তিনি সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে গিয়েছেন। বাংলাদেশে তার সুন্দরভাবে চিকিৎসা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি কতটা মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করেছে, তা দেশের মানুষ দেখেছে। তারা মূলত চেয়েছে, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার নামে দেশে অস্থিতীশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে।’
আজ বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির এক সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘বিএনপি একদফা আন্দোলনের নামে ১৩ বছর যাবত দেশের মানুষকে শান্তিতে থাকতে দিচ্ছে না। এর জন্য তারা সব করছে। তারা কখনও চায় না দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক। বঙ্গবন্ধু এ দেশের মানুষের জন্য সারাজীবন লড়াই করেছেন। তিনি সব সময় চেয়েছেন, এ দেশের মানুষ খেয়ে পরে সুন্দরভাবে বেঁচে থাকুক, শান্তিতে থাকুক। কিন্তু জিয়া মোশতাক-গংরা জাতির পিতাকে বাঁচতে দেয়নি। তারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট অমানবকিভাবে তাঁকে হত্যা করে। সেই মোশতাক ও জিয়া গংদের দোসর হলো বিএনপি-জামায়াত।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি কখনও চায় না বাংলাদেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হোক। তারা চায়, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় গিয়ে সবকিছু লুটপাট করতে। আবারও হাওয়া ভবন তৈরি করে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করতে চায়। তাদের এখন একটাই আফসোস— তারা দেশকে পাকিস্তানের আদলে বানাতে পারেনি।’
আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি সব সময় বিদেশিদের কাছে গিয়ে ধর্ণা দেয়। তারা পরাশক্তির কাছে নালিশ করে। লবিস্ট নিয়োগ করে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। বিদেশিদের টাকা দেয় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার জন্য। অর্থনীতিকে বাধাগ্রস্ত করতে তারা মূলত বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। এর আগে খালেদা জিয়াও নিবন্ধ লিখে জিএসপি সুবিধা নষ্ট করার চেষ্টা করেছেন, যা আমেরিকার বিভিন্ন পত্রিকায় এসেছে। বিএনপির কাজ হলো অপরাজনীতি করা, তারা কখনও স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। তারা সব সময় চায় বাংলাদেশ ধ্বংস হোক।’
শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে নাছিম বলেন, ‘জাতীয় শ্রমিক লীগ সব সময় মেহনতী মানুষের জন্য কাজ করে আসছে। আপনাদের সকলকে সেটা মনে রাখতে হবে। সংগঠনের শক্তিকে আরও বাড়াতে হবে। দক্ষ নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে। জনপ্রিয়দের খুঁজে বের করতে হবে। দেশের স্বার্থে, জাতির পিতার আদর্শের স্বার্থে, বাংলাদেশ উন্নয়ন অগ্রযাত্রার স্বার্থে এবং গণতন্ত্রের স্বার্থে দেশের অপরাজনীতির বিরুদ্ধে শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীদের এক হয়ে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতীয় শ্রমিক লীগের সকল নেতাকর্মী বিএনপি জামায়াতের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেবে।’
তিনি বলেন, ‘শ্রমিক লীগের গুরুত্ব অনেক বেশি। বিগত দিনে সংগঠনের অভ্যন্তরে কী হয়েছে, কেন হয়েছে, সেগুলো আর আমরা বলতে চাই না। আমরা চাই, সকল ভেদাভেদ ভুলে আজ থেকে নতুনভাবে শুভ যাত্রা করবে শ্রমিক লীগ। ঐক্যবদ্ধ হওয়ার মধ্যে দিয়ে শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করবে। আজ থেকে জাতীয় শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকবে।’
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘আজ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। অতীতের মতো আমরা সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবো।’
বৈঠকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে আগামী ৫ ফেব্রুয়ানি শনিবার সকাল ১১টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থিত শ্রমিক লীগ অফিস উদ্বোধন ও নব উদ্যোমে কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব কে এম আযম খসররুর সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন— আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, জাতীয় শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি তোফায়েল আহমেদ, মো. শাহাবউদ্দিন, মহসিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বি. এম. জাফর, সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান, দফতর সম্পাদক এ.টি.এম ফজলুল হক, প্রচার সম্পাদক মেহেদি হাসান, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ, শিক্ষা ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক শহীদ ডাকুয়া, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মিসেস প্রমিলা পোদ্দার, শ্রমিক উন্নয়ন ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান, ট্রেড সমন্বয় বিষয়ক সম্পাদক মো. ফিরোজ হোসাইন প্রমুখ।
এ টি