এনবি নিউজ : ইউক্রেনে বাংলাদেশি জাহাজে হামলায় নিহত থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের লাশ আজ দেশে আসছে না। তুরস্কের ইস্তানবুলে প্রবল তুষারপাতের কারণে ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। সব কিছু ঠিক থাকলে সোমবার অন্য একটি ফ্লাইটে হাদিসুরের লাশ ঢাকায় পৌঁছবে।
রোমানিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত দাউদ আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শুক্রবার ভোরে ইউক্রেনের বাংকারের ফ্রিজ থেকে হাদিসুরের লাশটি একটি ফ্রিজিং গাড়িতে করে রওনা দিয়ে ওই দিন দুপুরে মলদোভায় পৌঁছায়। সেখান থেকে পাঠানো হয় রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টে। সেখান থেকে শনিবার রাতে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি কার্গো বিমানে লাশটি বাংলাদেশের উদ্দেশে পাঠানোর কথা ছিল।
এদিকে হাদিসুরের লাশের অপেক্ষায় পথ চেয়ে বসে আছেন তার স্বজনরা।
হাদিসুরের মা আমেনা বেগম বলেন, সবার আগে এখন আমার বাবাকে দেখতে চাই। আমি কি করি, খাবার ও ওষুধ খাইছি কিনা তা আর কেউ জিগায় না। আমারে অ্যাহন কেডা ওষুধ কিন্না দেবে। ঢাকা গেলাম প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করব তাও পারলাম না। এর পর বুধবার দুপুরে বিমানবন্দরে গিয়েছিলাম। ২৮ নাবিকের সঙ্গে হাদিসুরের লাশ ফিরে পাব এ আশা নিয়ে। তাও বাজানের লাশ পাইলাম না।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) মালিকানাধীন জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ ড্যানিশ কোম্পানি ডেল্টা করপোরেশনের অধীনে ভাড়ায় চলছিল। মুম্বাই থেকে তুরস্ক হয়ে জাহাজটি ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে নোঙর করে। ওলভিয়া থেকে সিমেন্ট ক্লে নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা ছিল জাহাজটির।
কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে ওই দিন থেকে কার্যত বন্দরে আটকা পড়ে জাহাজটি। ২ মার্চ বিকাল ৫টা ৫ মিনিটে একটি ক্ষেপণাস্ত্র জাহাজে আঘাত হানে। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় নেভিগেশন ব্রিজে থাকা ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র থার্ড ইঞ্জি. হাদিসুর রহমান মারা যান। প্রায় ৩ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে অন্যরা আশ্রয় নেন ইঞ্জিন কন্ট্রোলরুমে। পরের দিন দুপুর আড়াইটায় একটি টাগবোটে করে তাদের নিরাপদ বাংকারে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় তারা সহকর্মী হাদিসুরের লাশও সঙ্গে নিয়ে যান। ওই বাংকারের একটি ফ্রিজারে সংরক্ষণ করা হয় হাদিসুরের লাশ।
৫ মার্চ বাংকার থেকে দুটি মাইক্রোবাসে মলদোভা হয়ে ৬ মার্চ দুপুর ১টার দিকে বুখারেস্টে পৌঁছায় ২৮ জনের নাবিক দলটি। তবে তারা হাদিসুরের লাশটি সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেননি। রোমানিয়া থেকে ২৮ নাবিক বুধবার দুপুরে ঢাকায় পৌঁছান। এ সময় হাদিসুরের বাবা, মা ও স্বজনরা শাহজালাল বিমানবন্দরে অবস্থান করে তার লাশ আনার দাবি জানান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শিগগিরই হাদিসুরের লাশ দেশে আনা হবে বলে তাদের আশ্বস্ত করে।
এ টি