এনবি নিউজ : বিএনপির নেতৃত্বে সমমনা দলগুলোর সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটাতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো যে গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করে, তাতে জনগণ সাড়া দেয়নি।
আজ বুধবার বিএনপির নেতৃত্বে যুগপৎভাবে গণ-অবস্থানের দিন একাধিক সমাবেশে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। এ সময় তারা বিএনপিকে উদ্দেশ করে বলেন, দেশবিরোধী কোনও শক্তি আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। মাথাচাড়া দিলে কঠোরভাবে দমন করা হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে দলটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা। ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফির সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, দীপু মনি, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
সমাবেশে বিএনপির আন্দোলনকে ভুয়া দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, পল্টনে মোটামুটি একটা সমাবেশ হয়েছে। ১২ দলীয় জোট দেখলাম বিজয় নগরে সমাবেশ করছে, সব মিলিয়ে ২৪ জন। ৭ দলীয় জোট প্রেস ক্লাবের সামনে চেয়ার পেতে বসে আছে, মঞ্চে ২০ জন সামনে সাংবাদিকসহ আরও ১৫ জন। ১টা পর্যন্ত ৩ দল উপস্থিত ছিল, চার দল নেই। ৭ দলীয় ঐক্যজোট, তারপর সমমনা ১২ দল বিএনপির সমমনারা দেখলাম ওই এলাকাজুড়েই আছে।
তিনি বলেন, তারা বসে আছে ফুটপাতের ওপর, মঞ্চও সেটা, শ্রোতাও সেখানেই, সবাই ফুটপাতকেন্দ্রিক। তারপরে এলডিপি দেখলাম, সেই একই দৃশ্যপট, কয়েকজন হাতে গোনা বসে আছে। ৫৪ দল আজকে একজন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। কী হবে? ঘোড়ার ডিম পাড়বে। ৫৪টা ঘোড়ার ডিম পাড়বে, ৫৪টি ঘোড়ার ডিম পাড়বে ৫৪টি বিরোধী রাজনৈতিক দল। ভুয়া…ভুয়া… ভুয়া… এটা গরুর হাট।
মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, যারা স্বাধীনতাকে নিয়ে শেখ হাসিনার উন্নয়নকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করবে তাদের রাজপথে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের ভোটের মাধ্যমে পঞ্চমবারের মতো শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করবো।
বিএনপি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা করছে দাবি করে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘তারা অনির্বাচিত সরকার চায়। তাদের প্রতিহত করা হবে। তারা নির্বাচনে এলে ভালো। না এলে কোনও আন্দোলন করে লাভ হবে না, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটানো যাবে না।
বাংলাদেশে কোনও অপশক্তির জায়গা হবে না উল্লেখ করে আবদুর রহমান বলেন, বিএনপির সঙ্গে দেশের জনগণ নেই, তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা হলো সাম্প্রদায়িক অপশক্তি।
বিএনপি নতুন করে আবার দেশে বিশৃঙ্খলা করার ষড়যন্ত্র করছে মন্তব্য করে মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বাংলাদেশে বিরোধী শক্তি আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। কেউ মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে আমরা তাদের কঠোরভাবে দমন করবো। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এখন বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এখন আবার দলটি ষড়যন্ত্র শুরু করছে।
২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালের অগ্নিসন্ত্রাসীরা আবারও মাঠে নেমেছে দাবি করে দীপু মনি বলেন, আসুন জাতির পিতার সোনার বাংলার স্বপ্নকে বুকে নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে অপশক্তিকে প্রতিহত করি।
এদিকে, রাজধানীর ফার্মগেটে ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সমাবেশে বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ প্রমুখ।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব কারাগার থেকে বের হয়েছেন। তিনি এখন বলেছেন, সরকারের পতন না ঘটিয়ে ঘরে ফিরবেন না। সরকারের পতন হবে না। কারণ, এই সরকার জনগণের সরকার। এই সরকার শান্তির সপক্ষের সরকার, এই সরকার উন্নয়নের সরকার। এই সরকারকে পতন ঘটানো যাবে না।
আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, যারা জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করতে পারে, যারা জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করতে পারে—তারা আর যাই হোক এ দেশের মঙ্গল কামনা করতে পারে না। ওরা খুনি। তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে।
মির্জা আজম বলেন, বিএনপি কর্মসূচি পালন করে সরকার হটানোর জন্য। তারা ক্ষমতায় থাকার সময়েও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অনেক অত্যাচার করেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতায় এসে উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের চেহারা পরিবর্তন করে দিয়েছে। তারা আবারও যদি রাস্তায় নামতে চায় প্রতিহত করা হবে।
শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, অপরাধের দায়ে বিএনপি-জামায়াতকে মানুষের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। যুবলীগ তাদের অনেক ছাড় দিয়েছে, সামনে ছাড় দেওয়া হবে না। আরেকবার মানুষের গায়ে হাত দিলে যুবলীগ সমুচিত জবাব দিবে।
এ টি