এনবি নিউজ : চলমান মহামারী শুরুর পাঁচ বছর আগেই ২০১৫ সালে সার্স করোনা ভাইরাসকে জৈব অস্ত্ররূপে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছিল চীন। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া এক গোপন নথির বরাত দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাপ্তাহিক পত্রিকা উইকেন্ড অস্ট্রেলিয়া এই দাবি করেছে। নথির তথ্য তুলে ধরে তাদের বক্তব্য, ২০১৫ সালেই করোনা ভাইরাসকে জীবাণু অস্ত্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করে ফেলেছিলেন চীনের সামরিক বিজ্ঞানীরা। সার্স করোনা ভাইরাস মূলত এক নতুন ধরনের জৈব অস্ত্র, যাকে কৃত্রিম প্রক্রিয়ায় মারণ ভাইরাসে রূপান্তরিত করা সম্ভব।
ফাঁস হওয়া চীনা নথি ভুয়া কিনা, তা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ রবার্ট পটারকে। তিনি জানান, ওই চীনা নথি একেবারেই ভুয়া নয়। কিন্তু এতে যা লেখা রয়েছে, তা গবেষকদেরই বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে, বিষয়টা কতটা গুরুতর।
উইকেন্ড অস্ট্রেলিয়া জানাচ্ছে, ওই চীনা নথির নাম ‘দ্য আনন্যাচারাল অরিজিন অব সার্স অ্যান্ড নিউ স্পিসিস অব ম্যান-মেড ভাইরাসেস অ্যাজ জেনেটিক বায়োওয়েপন’। সেখানে চীনা গবেষকদের অনুমান, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে লড়াই হবে জৈব অস্ত্র দিয়ে, আর সে কারণেই সার্স করোনা ভাইরাসকে মারণ ভাইরাস হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছিলেন তারা।
এ বিষয়ে ‘দ্য অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট’-এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর পিটার জেনিংস বলেন, আমরা যা পেয়েছি এই নথি থেকে, তা বন্দুকের গুলি ছুড়ে দেওয়ার সময় যে ধোঁয়া বের হয় তারই মতো। আমি মনে করি এটা খুব উল্লেখযোগ্য বিষয়। কারণ এ নথি খুব পরিষ্কারভাবে দেখিয়ে দেয় যে, করোনা ভাইরাসের বিভিন্ন প্রজাতিকে সামরিক ব্যবহারের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছিলেন চীনা বিজ্ঞানীরা। তারা ভেবেছিলেন এই করোনা ভাইরাসের স্ট্রেইনকে কীভাবে ছড়িয়ে দেওয়া যায়। আমরা এখন যে অবস্থায় আছি, এটা হতে পারে সামরিক ব্যবহারেরই ভাইরাস। দুর্ঘটনাক্রমে যা হয়তো অবমুক্ত হয়ে গেছে। এই নথি বলে দেয় কেন কোভিড-১৯ নিয়ে বাইরের দেশগুলোর তদন্তের ক্ষেত্রে চীন এত অনীহা প্রকাশ করে। যদি চীনের খাবারের বাজার থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ত, তা হলে নিজেদের স্বার্থেই তদন্তে সহযোগিতা করার কথা ছিল তাদের। কিন্তু আমরা চীনকে দেখতে পাচ্ছি বিপরীত অবস্থানে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান শহরের একটি সামুদ্রিক খাদ্যের বাজার থেকে প্রথম নভেল করোনা ভাইরাস মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। যার মাত্র কিছুদিনের মধ্যেই ভাইরাসটি গোটা পৃথিবীতে ছড়িয়ে ভয়াবহ মহামারী সৃষ্টি করেছে। ইতোমধ্যে এই মহামারীতে পৃথিবীর ২২০টি দেশ ও অঞ্চলে ১৫ কোটি ৯০ লাখ ৩৭ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত ও ৩৩ লাখের বেশি মানুষ মারা গেছে।
এ টি