এনবি নিউজ : বগুড়ায় করোনা বিশেষায়িত ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আজ শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। রোগীদের স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন, অক্সিজেন সরবরাহের সমস্যার কারণে ওই সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে, হাসপাতালটিতে এখনও আট রোগী মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একই সময়ের মধ্যে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চার কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, হাসপাতালটিতে ২০০ রোগীর ধারণ ক্ষমতা থাকলেও আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২২৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে ১০ জন রোগীর অক্সিজেনের মাত্রা একেবারেই নিচের দিকে। তাঁদের হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করতে হচ্ছে। হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা সংকটের চিত্র জেলার অন্যান্য হাসপাতালেও।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বগুড়ার তিন হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে শ্বাসকষ্টে থাকা রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহের জন্য হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা আছে মোট ২৩টি। এর মধ্যে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে রয়েছে দুটি, শজিমেক হাসপাতালে ১১টি ও বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০টি।
মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শফিক আমিন কাজল জানান, হাসপাতালে রোগীর যে পরিমাণ চাপ, সেখানে অন্তত ২০টি হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা প্রয়োজন। কিন্তু আছে মাত্র দুটি। এ কারণে চাহিদা অনুযায়ী রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অধিক শ্বাসকষ্টে থাকা রোগীদের বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
বগুড়ার সিভিল সার্জন গউসুল আজিম চৌধুরী বলেন, ‘গত বছর মোহাম্মদ আলী হাসপাতালকে করোনা বিশেষায়িত ঘোষণা করার সময় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা—কোনোটাই ছিল না। পরে আট শয্যার আইসিইউ চালু করা হয়। কিন্তু হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার বরাদ্দ মিলেছে মাত্র দুটি। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালু হয়েছে।’
হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা ছাড়া আইসিইউ শয্যা করোনা রোগীদের জন্য তেমন কাজে আসে না উল্লেখ করে সিভিল সার্জন বলেন, ‘শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আরও কমপক্ষে ২৫টি হাই-ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা দরকার। বরাদ্দ চেয়ে দফায় দফায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও বরাদ্দ মেলেনি।’