শনিবার আতামিতে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি বৃষ্টিপাত হয়, এরই এক পর্যায়ে ভূমিধস হয়; প্রবল কাদা ও পাথরের স্রোত ঘরবাড়ি গুড়িয়ে দিয়ে রাস্তা ভেঙে এগিয়ে যায়।
রাষ্ট্রায়ত্ত এনএইচকে টেলিভিশনকে এক ব্যক্তি বলেন, “আমরা মা এখনও নিখোঁজ। এখানে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটতে পারে তা কল্পনাও করিনি।”
৭৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি জানান, তার অপর পাশের ঘরটি কাদার স্রোতে ভেসে গেছে আর সেখানে যে দম্পতি থাকতো তারা নিখোঁজ রয়েছেন।
“এটি নরক,” বলেন তিনি।
সোমবারের মধ্যে ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারীর সংখ্যা বেড়ে দেড় হাজার জনে দাঁড়িয়েছে এবং আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা বলেছেন, “যত দ্রুত সম্ভব ধ্বংসস্তূপের মধ্যে চাপা পড়া সব লোককে উদ্ধার করতে চাই আমরা।”
পুলিশ, দমকল কর্মী ও সামরিক বাহিনীর সদস্যরা উদ্ধারকাজে সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
জাপান সরকারের মুখপাত্র হিরোকি ওনুমা রয়টার্সকে তৃতীয় আরেকজনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে জানিয়েছিলেন, আতামিতে ১১৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিহত তৃতীয় জন একজন নারী বলে জাপানি গণমাধ্যম জানিয়েছে।
শনিবার ঘটনার পর থেকে রোববার পর্যন্ত নিখোঁজের সংখ্যা ২০ জন বলা হয়েছিল, কিন্তু সোমবার কর্মকর্তারা পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের ফোন কলের সূত্রধরে নিখোঁজদের সংখ্যা নির্ধারণ বাদ দিয়ে বাসিন্দাদের তালিকা ধরে অনুসন্ধান শুরু করার পরই সংখ্যাটি অনেক বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন ওনুমা।
তবে সোমবার দুপুরের মধ্যে নিখোঁজদের সংখ্যা হ্রাস পেয়ে প্রায় ৮০ জনে দাঁড়িয়েছে বলে বার্তা সংস্থা কিয়োদো জানিয়েছে।
রাজধানী টোকিও থেকে ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে ৩৬ হাজার বাসিন্দার শহর আতামিতে শনিবার স্থানীয় সময় সকালে ভূমিধসের ঘটনাটি ঘটে। পাহাড়ের ধাপে একটি উষ্ণ প্রস্রবণ রিজোর্ট ধসে সাগরের দিকে চলে যায়। পানি, কাদা ও আবর্জনার স্রোত প্রবাহিত হয়ে একটি নদীর ধরে প্রায় দুই কিলোমিটার গিয়ে সাগরে পরে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে। এতে ১৩০টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব কাতসুনোবু কাতো আতামির বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। ওই এলাকার মাটি আলগা হয়ে আছে ফলে অল্প বৃষ্টিও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
মুখপাত্র ওনুমা জানিয়েছেন, আতামিতে এখন বৃষ্টি থেমেছে, কিন্তু আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় ফের ভূমিধসের সম্ভাবনা বাড়ছে।