এনবি নিউজ : আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় একটি স্থানে ড্রোন হামলা চালিয়ে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) স্থানীয় একটি শাখার এক জন পরিকল্পনাকারীকে হত্যার করেছে মার্কিন সেনাবাহিনী। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে—আফগানিস্তানের নানগাহার প্রদেশে অবস্থানরত আইএস-কে গোষ্ঠীর এক জন ‘পরিকল্পনাকারীকে’ লক্ষ্য করে ছিল এই অভিযানটি। আইএস-কে বা আফগানিস্তানের খোরাসান প্রদেশের ইসলামিক স্টেট মূলত আইএসের একটি শাখা।
এর আগে আইএস-কে জানিয়েছিল, তারা কাবুল বিমানবন্দরে গত বৃহস্পতিবার আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে। ওই হামলায় ১৭০ ব্যক্তি নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে ১৩ মার্কিন সেনাও ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে—তাদের প্রাথমিক তথ্য বলছে, নানগাহারে যে ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলাটি করা হয়েছে, তার মৃত্যু হয়েছে। এবং ওই হামলায় কোনো বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়নি বলেও দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
তালেবান এ মাসের শুরুর দিকে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে দেশটির রাজধানী কাবুলে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে গণ-উদ্ধার তৎপরতা বা লোকজন সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম চলছে।
যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে উদ্ধার তৎপরতা সমাপ্তির যে সময়সীমা নির্ধারণ করেছে, তা শেষ হচ্ছে আগামী মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট)। এরই মধ্যে গত দুই সপ্তাহে আফগানিস্তান থেকে এক লাখের বেশি মানুষ উদ্ধার করা হয়েছে।
এর মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে হামলা চালায় আইএস-কে। এর পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গতকাল শুক্রবার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন—হামলার পেছনে যারা রয়েছে, তাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হবে।
বিবিসি বলছে, আইএস-কে আফগানিস্তানের সব জিহাদি গোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ও সহিংস।
কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে গত বৃহস্পতিবার পুরুষ, নারী ও শিশুদের ভিড়ে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। বোমা বিস্ফোরণে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করা বহু আফগান নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে ১৩ মার্কিন সেনা কর্মকর্তাসহ দুই ব্রিটিশ নাগরিক এবং এক জন ব্রিটিশ নাগরিকের শিশু সন্তানও ছিল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট গতকাল শুক্রবার হামলাকারীদের সতর্ক করে বলেন, ‘আমরা ক্ষমা করব না। আমরা ভুলব না। আমরা তোমাদের খুঁজে বের করব এবং তোমাদের চরম মূল্য দিতে হবে।’
প্রায় পাঁচ হাজার মার্কিন সেনা এখনও কাবুল বিমানবন্দরে অবস্থান করছে। যেসব আফগান নাগরিক দেশ ছেড়ে যেতে মরিয়া, তাদের চলে যাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করছেন তাঁরা।
কাবুলে গত বৃহস্পতিবারের বিস্ফোরণের পর আফগানিস্তানে এটিই প্রথম মার্কিন ড্রোন হামলা।
মার্কিন সেনাবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডের ক্যাপ্টেন বিল আরবান বলেন, ‘আফগানিস্তানের নানগারহার প্রদেশে মনুষ্যবিহীন আকাশ হামলা চালানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আমরা টার্গেটকে হত্যা করতে পেরেছি। আমরা জানা মতে, হামলায় বেসামরিক কেউ হতাহত হয়নি।’