এনবি নিউজ : আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে গুমের সংস্কৃতি চালু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারকে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করতে হবে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ সোমবার আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে ‘মায়ের ডাক’ আয়োজিত এক মানববন্ধনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এ কেমন দেশ, কেমন রাষ্ট্র, কেমন সরকার আমরা বানালাম, যেখানে আমাদের সন্তানেরা নিখোঁজ হয়ে যাবে। যাদের কোনো হদিস খুঁজে পাওয়া যাবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকেরা তাদের তুলে নিয়ে যাবে, সরকার তার কোনো জবাব দেবে না।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, “এই ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতা দখলের পর থেকে গুম কথাটি চালু হয়েছে। যাঁরা একটু প্রতিবাদী ও সচেতন, এবং গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য যখনই আন্দোলন করেন, তখনই তাঁদের স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য তাঁদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, গুম করে দেওয়া হয়। সরকারের কাছে গেলে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে গেলে তারা বলে, ‘আমরা কিছুই জানি না।’”
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম একটি মানবতার সমাজ গঠন করতে সক্ষম হব বলে। গণতন্ত্রের পক্ষের একটি রাষ্ট্র আমরা তৈরি করতে পারব। মানুষের অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠিত হবে। সে অধিকারগুলোকে আজ অবৈধ সরকার শক্তি প্রয়োগ করে। তারা বুলেট ও পিস্তল দিয়ে মানুষের মানুষের কণ্ঠকে স্তব্ধ করতে চায়। আট থেকে দশ বছর ধরে যাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তাদের পরিবারগুলোর দায়িত্ব কে নেবে?’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘গুম হওয়া ইলিয়াস আলীর মেয়ে এখন তো দরজার দিকে তাকিয়ে থাকে, কখন তার বাবা ফিরে আসবে। তার বাবা ফিরে আসে না। এই যে ছোট ছোট বাচ্চাদের আহাজারি আপনারা শুনলেন, আমরা তো আমাদের চোখের পানি ধরে রাখতে পারি না। অসহায়ত্বের একটি বেদনা, যন্ত্রণা আমাদের কুঁড়ে কুঁড়ে খায়। আমরা এ থেকে মুক্তি চাই। আমরা অবশ্যই আমাদের এই মানুষগুলোকে ফিরে পেতে চাই। পরিবারের তাদের যেন ফিরে পেতে পারে।’
‘সরকারকে বারবার আমরা আহ্বান করেছি। তারা গেল কোথায় খুঁজে বের করার দায়িত্ব তো আপনাদের। পরিবারের কাছে তাদের ফিরিয়ে দিন। তাদের অবশ্যই ফিরিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় ইতিহাসের কাঠগড়ায় আপনাদের জবাব দিতে হবে। জনগণের আদালতে আপনাদের বিচার করা হবে’, যোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম।