এনবি নিউজ : রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ভারত সরকার রেল উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। এলওসি’র মাধ্যমে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছি। ভারতের সঙ্গে বন্ধ থাকা সব কয়টি রেললাইন চালু করা হচ্ছে। দুদেশের মধ্যে যাত্রী ও মালবাহী ট্রেনের সংখা বাড়ানো হচ্ছে।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর রেল ভবনে ভারতের দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পরামর্শক নিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
দীর্ঘদিন থমকে ছিল সিরাজগঞ্জ-বগুড়া রেলপথ নির্মাণ কাজ। প্রায় তিন বছর আগে সরকারের অনুমোদন পেলেও পরামর্শক নিয়োগ করতে না পারায় অনিশ্চিত ছিল এ রেলপথটি। অবশেষে ভারতীয় দুই প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
৯৭ কোটি টাকার বিনিময়ে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান রাইটস ইন্ডিয়া লিমিটেড এবং আরভি ইন্ডিয়া যৌথভাবে এ প্রকল্পের পরামর্শকের কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রী বলেন, প্রায় পাঁচ হাজার ৫৮০ কোটি টাকায় সিরাজগঞ্জ থেকে বগুড়া পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করা হবে। বর্তমানে ঢাকা-রংপুর বিভাগের জেলাতে ট্রেন যায় পাবনার ঈশ্বরদী ঘুরে বগুড়ার সান্তাহার হয়ে। এ কারণে শত কিলোমিটার বাড়তি পথ পাড়ি দিতে হয় উত্তরের যাত্রীদের। ঢাকা-বগুড়ার বর্তমান দূরত্ব ৩২৪ কিলোমিটার। নতুন রেলপথ নির্মাণ হলে এই দূরত্ব কমে হবে ২১২ কিলোমিটার। ১১২ কিলোমিটার দূরত্ব কমায় আশা করা হচ্ছে অন্তত তিন ঘণ্টা সাশ্রয় হবে। আমাদের এ কাজে ভারত এগিয়ে এসেছে।
বাংলাদেশ রেলওয়েতে ভারতের বিভিন্ন সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের ক্যাটারিং সার্ভিসের উন্নয়নসহ ট্রেনিং ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। আমাদের রেলের লোকবলকে তারা প্রশিক্ষণ দেবে বলেও জানিয়েছে।
ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রয় কুমার দোরাইস্বামী বলেছেন, ভারত-বাংলাদেশ একই সূতোয় বাঁধা। বায়লাদেশ রেলে উন্নয়নে ভারত সরকার বিশেষভাবে অবদান রাখছে। আগামীতেও যেকোনো উন্নয়নে অবদান রাখবে। আর্থিকভাবে উন্নয়নের কারণে ভারত বাংলাদেশ উভয় দেশ উপকৃত হচ্ছে। অনুষ্ঠান শেষে যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে প্রচুর লোক ভারতে যাচ্ছেন চিকিৎসা, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কাজে। রেলপথ সাশ্রয়ী ফলে বহু লোক ট্রেনে ভ্রমণ করত। আমরা আগামী শীতের আগেই পর্যটন ভিসা চালু করব। একই সঙ্গে দুদেশের মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলাও চালু করা হবে। আশা করছি, ওই সময়ের মধ্যে করোনা সংক্রমণও নিয়ন্ত্রণে আসবে।
আমরা চাই, বাংলাদেশের জনগণ ভারতে গিয়ে যথাযথ চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় কাজ করুক। ভারত বাংলাদেশ আলাদা রাষ্ট্র হলেও, বন্ধনটা একেবারেই হৃদয়ের। সংস্কৃতি সাংস্কৃতিসহ যেকোনো উন্নয়ন বিষয়ে ভারত বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন রেল সচিব সেলিম রেজা। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার এবং রাইটস ইন্ডিয়া লিমিটেডের পরিচালক অনিল ভিজ। চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ছয় মাসে প্রকল্পের বিস্তারিত সমীক্ষা করবে এ দুই প্রতিষ্ঠান।
চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষে প্রকল্প পরিচালক মো. আবু জাফর মিঞা এবং কনসালটেন্সি সার্ভিসের পক্ষে ভারতের রাইটসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্জয় আগারওয়াল।
এ টি