এনবি নিউজ : একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখা শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফীর মরদেহ সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একে একে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
নাসির উদ্দিন ইউসুফ আরও বলেন, ‘ষাটের দশকে তিনি চট্টগ্রামকে একত্রিত করেছিলেন। তিনি যে সংগঠন তৈরি করেছেন, তা ৬৮, ৬৯ সাল হয়ে ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে অপরিসীম অবদান রেখেছে। তাঁর সাহস ছিল অনুকরণীয়।’
এদিকে শহীদ মিনারে মুশতারী শফীর প্রতি একে একে শ্রদ্ধা জানায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ, বটতলা, বাংলাদেশ তাঁতী লীগ, সুবচন নাট্য সংসদ, নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগ, আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।
পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফী গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি দুই ছেলে, চার মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
বেগম মুশতারী শফীর পরিবার একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সাহসী ভূমিকা পালন করেছিল। তাঁর স্বামী ডা. শফী মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র-গোলাবারুদ নিজের হেফাজতে রেখেছিলেন। এ কারণে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর সদস্যেরা তাঁকে এবং মুশতারী শফীর ভাইকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। স্বামী ও ভাই হারিয়েও মুশতারী শফী মনোবল অক্ষুণ্ণ রেখে চট্টগ্রামে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে যান। স্বাধীন দেশে প্রগতিশীল সংস্কৃতির সংগ্রাম, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন, নারীমুক্তির আন্দোলন, নাগরিক আন্দোলনসহ সব ক্ষেত্রে রাজপথে সোচ্চার থেকেছেন।
এদিকে, বেগম মুশতারী শফীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ ছাড়া শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) চট্টগ্রাম জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল নবী ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অশোক সাহা।