এনবি নিউজ : প্রতিবেশী ইউক্রেইনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানকে ‘বর্বরতা’ আখ্যা দিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির জন্য মানবিক ও লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য সামরিক সহায়তা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পশ্চিমা নেতারা।]
এদিকে রুশদের বোমা ও গোলা থেকে বাঁচতে অবরুদ্ধ শহরগুলোর ভূগর্ভের স্থাপনাগুলোতে আশ্রয় নিয়ে আছে ইউক্রেনীয়রা।
রয়টার্স জানায়, বৃহস্পতিবার এক অভূতপূর্ব নজির গড়ে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে নেটো, জি৭ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন- এই তিন বড় জোটের সম্মেলন হয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ইউরোপীয় নেতারা ১৯৯০ সালের বলকান যুদ্ধের পর ইউরোপে সবচেয়ে বড় যুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন সেখানে।
এদিন ইউক্রেইনের প্রতিবেশী চারটি সদস্য দেশে নতুন সামরিক ইউনিট মোতায়েনের পরিকল্পনা ঘোষণা করে নেটো। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইউক্রেইনের জন্য সহায়তার পরিমাণ এবং অবরোধের পরিধি বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এই অবরোধের আওতায় একজন নারীকেও যুক্ত করা হয়েছে, লন্ডনের দাবি অনুযায়ী তিনি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সৎ মেয়ে।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন ব্রাসেলসে সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের জন্য এককভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং বিশ্বকে লক্ষ্য রাখতে হবে যে এই ব্যক্তি (পুতিন) কতোটা বর্বর এবং কীভাবে নিরাপরাধ মানুষের জীবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।”
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, “পুতিন এরইমধ্যে বর্বরতার সীমারেখা অতিক্রম করেছেন।”
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যে রাশিয়ার জ্বালানির ওপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে আনার পদক্ষেপ নিয়েছে, যার ফলে পুরো মহাদেশজুড়ে হয়তো জ্বালানির জন্য খরচ আরও বেড়ে যাবে। রাশিয়া থেকে পুরো ইউরোপের মোট চাহিদার ৪০ শতাংশ গ্যাস এবং ২৫ শতাংশের বেশি তেল আসে।
রয়টার্স লিখেছে, রাশিয়ার জ্বালানি সম্পূর্ণ বয়কট করা এবং ইউক্রেইনের আকাশে ‘উড্ডয়ন নিষিদ্ধ অঞ্চল’ ঘোষণার যে দাবি প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি করে আসছিলেন, তা অনেকটা থামিয়ে দিয়েছে পশ্চিমাদের এসব পদক্ষেপ।
ব্রাসেলসে বৃহস্পতিবার পশ্চিমা নেতাদের ঐক্যের প্রদর্শনীর প্রতিক্রিয়ায় মস্কো বলেছে, ‘কিইভের ক্ষমতা দখলকারী গোষ্ঠীকে’ অস্ত্র যুগিয়ে যুদ্ধে নামানোর জন্য পশ্চিমাদের বরং নিজেদেরই দোষারোপ করা উচিত।
জাতিসংঘের হিসাবে, ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া রাশিয়ার সেনা অভিযানে এ পর্যন্ত হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, ইউক্রেইন ছেড়ে শরণার্থী হয়েছে ৩৬ লাখ মানুষ, ধ্বংস হয়ে গেছে অনেক শহর এবং ইউক্রেইনের অর্ধেক শিশু নিজ বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।