করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এ গত বছরের জানুয়ারিতে ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারা কাউন্টিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম রোগীর মৃত্যু হয়েছিল।
এক প্রজ্ঞাপনে মৃতদের সম্মান জানিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পতাকা শুক্রবার সূর্যাস্ত পর্যন্ত অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রজ্ঞাপনে বাইডেন বলেন, “এই দুঃখজনক পর্বে আমরা মৃতদের ও পেছনে রেখে যাওয়া তাদের প্রিয়জনদের কথা ভাবছি। আমরা, একটি জাতি হিসেবে, অবশ্যই তাদের স্মরণ করবো যেন আমরা নিরাময় শুরু করতে পারি, ঐক্যবদ্ধ হতে পারি এবং এক জাতি হিসেবে এই মহামারীকে পরাজিত করার উদ্দেশ্য খুঁজে পাই।” মহামারীতে যে সব প্রাণ হারিয়ে গেছে সেই পাঁচ লাখ মানুষের সম্মানে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির ন্যাশনাল ক্যাথেড্রালের ঘণ্টা ৫০০ বার বাজানো হয়। ঘণ্টা বাজার পর হোয়াইট হাউসে গুরুগম্ভীর এক বক্তৃতায় বাইডেন বলেন, “আমেরিকায় গণমৃত্যুর যে পরিমাণ তা স্বীকার করে আমরা প্রত্যেক ব্যক্তিকে এবং যে জীবন তারা যাপন করেছেন তা স্মরণ করছি।
“সেই ছেলে যে প্রতি রাতে ফোন করে তার মায়ের খোঁজ নিত। সেই বাবা, কন্যা যার দুনিয়াকে উদ্ভাসিত করেছিল। সেই প্রিয় বন্ধু যে সবসময় পাশে ছিল। সেই নার্স যিনি তার রোগীদের বাঁচাতে চেয়েছিলেন।”
এর কয়েক মূহুর্ত পর বাইডেন ও তার স্ত্রী, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও তার স্বামী কালো পোশাক ও কালো মাস্ক পরে উপস্থিত হন। তারা নিরবে দাঁড়িয়ে থাকেন আর তখন বন্দনা সংগীত ‘অ্যামেইজিং গ্রেস’ বাজানো হয়।
সোমবার স্থানীয় সময় বিকাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দুই কোটি ৮০ লাখেরও বেশি ছিল এবং মৃত্যুর সংখ্যা পাঁচ লাখ ২৬৪ জনে দাঁড়িয়েছিল বলে রয়টার্সের টালি জানিয়েছে।
তবে দৈনিক শনাক্ত রোগী ও তাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা বড় দিনের ছুটি শুরু হওয়ার পূর্ব থেকে শুরু করে এখন সবচেয়ে কম।
বিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারীতে মোট মৃত্যুর প্রায় ১৯ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে হয়েছে, যে দেশটির জনসংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার মাত্র চার শতাংশ।
এই ঘটনাটিকে গত ১০০ বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জাতিগত স্বাস্থ্য বিষয়ে সবচেয়ে খারাপ ঘটনা বলে অভিহিত করেছেন দেশটির শীর্ষ সংক্রামক বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউচি।
সোমবার রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এই স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, কয়েক দশক পর লোকজন বলবে ‘২০২০ এর সেই ভয়ানক বছর, হয়তো ২০২১ ও থাকবে’।
যুক্তরাষ্ট্রের এই মৃত্যুর সংখ্যায় রাজনৈতিক বিভাজনের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।