এনবি নিউজ ডেস্ক : তুরস্কের বৃহত্তম নগরী ইস্তাম্বুলের কেন্দ্রস্থলে ইস্তিকলাল অ্যাভিনিউতে এ বিস্ফোরণের ৬ জন নিহত ও ৮১ জন আহত হয়। যে ব্যক্তি বোমা রেখে যাওয়ার পর ইস্তাম্বুলে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, সেই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা আনাদোলুর টুইটার একাউন্টের ভাষ্য অনুযায়ী, সোমবার তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেয়মান সোইলু একথা জানিয়েছেন।
রোববারের তুরস্কের বৃহত্তম নগরী ইস্তাম্বুলের কেন্দ্রস্থলে ইস্তিকলাল অ্যাভিনিউতে ওই বিস্ফোরণের ছয় জন নিহত ও ৮১ জন আহত হয়।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তায়িপ এরদোয়ান একে বোমা হামলা অভিহিত করে ‘গোয়েন্দাদের কাছ থেকে পাওয়া প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী এটা সন্ত্রাসী হামলা বলেই মনে হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিস্ফোরণের পর কয়েকশত মানুষ ঐতিহাসিক ইস্তিকলাল অ্যাভিনিউ ছেড়ে পালিয়ে যায়, এ সময় অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশ ছুটে আসে। অন্যান্য সাপ্তাহিক ছুটির দিনের মতো এ দিনও নগরীর বিয়োগু এলাকার অ্যাভিনিউটিতে ক্রেতা, পর্যটক ও পরিবারগুলো জড়ো হয়েছিল।
রয়টার্স জানায়, তাদের হাতে আসা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে স্থানীয় সময় বিকাল ৪টা ১৩ মিনিটে বিস্ফোরণটি ঘটে, ধ্বংসাবশেষ ছিটকে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আর বেশ কয়েকজন মানুষ রাস্তায় পড়ে যায়, বাকিরা আতঙ্কে পড়িমড়ি করে ছুটে পালায়।
বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা পর তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি হতাহতের সর্বশেষ তথ্য জানান ও ‘খুব শিগগিরই’ ঘটনাটির ফয়সালা করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন।
পরে কর্তৃপক্ষ জানায়, এ হামলায় নিহতদের মধ্যে সরকারি এক মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মী এবং তার কন্যাও আছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচ জন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে আছে এবং তাদের মধ্যে দুই জনের অবস্থা সঙ্কটজনক।
শেষ খবর পর্যন্ত কোনো পক্ষ এ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
ইস্তাম্বুল ও তুরস্কের বিভিন্ন শহর আগেও কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী, জঙ্গি ও অন্যান্য গোষ্ঠীর হামলার শিকার হয়েছে, এগুলোর মধ্যে ২০১৫-১৬ সালের সিরিজ হামলাগুলোও আছে।
বিশ্বের নেতৃস্থানীয় অর্থনীতির দেশগুলোর জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার আগে এক সংবাদ সম্মেলনে এরদোয়ান বলেন, “‘সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে তুরস্ক এবং তুরস্কের জনগণকে হারানোর চেষ্টা আজও ব্যর্থ হয়েছে, যেমনটা গতকাল হয়েছিল এবং আগামীকালও হবে।
‘‘আমি আমার জনগণকে নিশ্চিত করে বলতে পারি, এই হামলার পেছনে দায়ী অপরাধীদের তাদের প্রাপ্য শাস্তি দেওয়া হবে।”
যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তাতে এ হামলার পেছনে একজন ‘নারীর ভূমিকা’ থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
“নিঃসন্দেহে এটা একটি সন্ত্রাসী হামলা ছিল এমনটা বলা ভুল হতে পারে, তবে প্রাথমিকভাবে যেসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে এবং আমাদের গোয়েন্দাদের কাছ থেকে পাওয়া প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী এটাকে সন্ত্রাসী হামলা বলেই মনে হচ্ছে।”
তুরস্কের আইনমন্ত্রী বেকির বোজদাগকে উদ্ধৃত করে আনাদোলু জানিয়েছে, এক নারী একটি বেঞ্চে ৪০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে বসে ছিলেন, তিনি উঠে যাওয়ার কয়েক মিনিট পরই বিস্ফোরণটি ঘটে। সেখানে একট টাইম বোমা পেতে রাখা হয়েছিল অথবা রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।