নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় মৎস্য খামারের ভিতরে মাদক সেবনে বাঁধা দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে চাঁদা দাবি করে চাহিত চাঁদা না পেয়ে খামারে হামলা ও ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠেছে।
হামলায় গুরত্বর আহত ৩জনকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে হাসপাতাল থেকে আহতদের চিকিৎসা ফাইল গায়েবের ঘটনা ঘটে। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের ১নং ওয়ার্ডে (মেডিসিন বিভাগ) চিকিৎসাধীন মো. জামাল (২৫), মো. রায়হান (২০) ও নুরুল হক (২১) অভিযোগ করে বলেন, গত রোববার দুপুরে হঠাৎ করে একদল সন্ত্রাসী সুবর্ণচর উপজেলার চরওয়াপদা ইউনিয়নের চরবৈশাখী গ্রামের ফারুক চেয়ারম্যানের মৎস্য খামারে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এসময় বাঁধা দিতে গেলে তাদেরকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে সন্ত্রাসীরা। পরে স্থানীয়রা তাদের গুরত্বর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সোমবার দুপুরে সেখান থেকে আহতদের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের অভিযোগ, নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির ২ ঘন্টা পরই হাসপাতাল থেকে তাদের ৩জনের চিকিৎসা ফাইল গায়েব হয়ে যায়। পরে সন্ধ্যায় কর্তব্যরত নার্স চিকিৎসা দিতে গিয়ে চিকিৎসা ফাইল না পেয়ে চিকিৎসা দিতে ব্যার্থ হন। এতে রাত ১১টা পর্যন্ত বিনা চিকিৎসায় থাকতে হয় তাদের।
হামলায় আক্রান্ত মৎস্য খামারের মালিক মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, সুবর্ণচর উপজেলার চরবৈশাখী গ্রামে ৬০ একর ভূমির মধ্যে তাঁরা তিন ব্যক্তি শেয়ারে মৎস্য খামার গড়ে তোলেন। বর্তমানে ওই খামারে প্রায় ৫ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রয়েছে।
তিনি বলেন, স্থানীয় কিছু মাদকসেবী গত কয়েক মাস থেকে তাদের মৎস্য খামারের ভিতরে প্রবেশ করে মাদক সেবনের চেষ্টা করে। এতে খামারের দায়িত্বশীল লোকজন তাদেরকে মাদক সেবনে বাঁধা দেওয়ায় মাদক সেবীরা ক্ষুব্ধ হয়ে খামার চালাতে হলে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। কিন্তু আমরা চঁাদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে স্থানীয় সন্ত্রাসী মো. বেলাল উদ্দিন, মো. হেলাল উদ্দিন, মো. মোহন ও মো.রায়হানের নেতৃত্বে একদল সঙ্গবদ্ধ সন্ত্রাসী রোববার দুপুরে আমাদের মৎস্য খামারে ডুকে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে খামার দেখাশুনার দায়িত্বে থাকা ৩জনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এই ঘটনায় খামারের মালিক মো. সাহাব উদ্দিন সুবর্ণচর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
চরজব্বর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাউসার আহমেদ জানান, এই ব্যাপারে অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে তদন্তের জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা ফাইল গায়েবের বিষয়টি স্বীকার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্তাবধায়ক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ওই রোগীদের চিকিৎসা ফাইল খঁুজে পাওয়া না গেলেও হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভর্তি নোটের তথ্য অনুযায়ী রোগীদের চিকিৎসা চলমান রয়েছে। তবে চিকিৎসা ফাইল কোথায় গেল, তা খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।
নোয়াখালী।