এনবি নিউজ : মহামারীকালে পরীক্ষা ছাড়াই আগের পরীক্ষার ভিত্তিতে এবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে।পরীক্ষা না নিয়ে ফল প্রকাশে আইন সংশোধনের পর শনিবার একযোগে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়, যাতে পৌনে ১৪ লাখ শিক্ষার্থীর অপেক্ষার অবসান ঘটল। পাশের হার শতকরা ১০০ জন। এরর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ৫৭ ৯২৬, রাজশাহীতে ২৬৫৬৮, কুমিলায় ৯৩৬৪, যশোরে ১২৮৯২ ,ময়মনসিং ১০৪০, চট্টগ্রামে ১২১৪৩, বরিশালে ৫৫৬৮, সিলেটে ৪২৪২ এবং দিনাজপুরে ১৪১৭১ জন। । মাদ্রাসা বোর্ডে ৪০৪৮ ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৪১৪৫ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে।
ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সকালে এক অনুষ্ঠানে এই ফল প্রকাশ হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে ডিজিটালি এই পাবলিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে এইচএসসির ফলাফলের সারসংক্ষেপ গ্রহণ করেন।
এই অনুষ্ঠান থেকেই শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ফলাফলের বিস্তারিত গণমাধ্যমকর্মীদের জানাবেন।
এইচএসসির ফল প্রকাশের এই উচ্ছ্বাস ২০১৯ সালের; মহামারীকালে এবার এই পাবলিক পরীক্ষার ফল নির্ধারণ করা হয়েছে ভিন্নভাবে। ফাইল ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি
১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থীর এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ এপ্রিল থেকে।
কিন্তু করোনাভাইসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার আগে এসএসসি পরীক্ষা হয়ে গেলেও আটকে যায় এইচএসসি পরীক্ষা।
মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও পরীক্ষা নেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি না হওয়ায় গত ৭ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পঞ্চম ও অষ্টমের সমাপনীর মতো এইচএসসি পরীক্ষাও নেওয়া যাচ্ছে না।
এরপর অষ্টমের সমাপনী এবং এসএসসির ফলাফলের গড় করে ২০২০ সালের এইচএসসির ফল নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয়। জেএসসি-জেডিসির ফলাফলকে ২৫ এবং এসএসসির ফলকে ৭৫ শতাংশ বিবেচনায় নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষিত হল।
কিন্তু আইনে পরীক্ষা নিয়ে ফল প্রকাশের বিধান থাকায় তা সংশোধনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
বিশেষ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়াই ফল প্রকাশের বিধান যুক্ত করে গত সপ্তাহে জাতীয় সংসদে আইন সংশোধন করতে হয়।
সংসদে পাস হওয়া তিনটি বিলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সই করার পর সোমবার রাতে‘ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট-২০২১’ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০২১’, ‘বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০২১’ গেজেট আকারে জারি করে সরকার।
এরপর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রস্তুত, ঘোষণা ও সনদ বিতরণের জন্য শিক্ষা বোর্ডগুলোকে ক্ষমতা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সবচেয়ে বেশি ঢাকায়, কম সিলেটে
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী গত বছরের এইচএসসি ও সমান পরীক্ষায় যাদের অংশ নেওয়ার কথা ছিল, তাদের সবাইকে উত্তীর্ণ করা হয়েছে। সে হিসাবে এই পরীক্ষায় পাসের হার শতভাগ।
বোর্ডগুলোর ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৭ হাজার ৯২৬ জন জিপিএ৫ পেয়েছে। অন্য যেকোনো বোর্ডের তুলনায় এই বোর্ডেই জিপিএ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি।
আত/৩০ জানুয়ারি ২০২১